উৎসব পূজা পার্বন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
উৎসব পূজা পার্বন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বাংলার উৎসব ও মেলা ২০২৫ : বাংলায় কার্তিক ও অগ্রহায়ন মাসের মেলা ও উৎসব (নভেম্বর) || Edik-Odik

কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস বাংলার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব বহনকারী মাস। কার্তিক মাস বাংলা সনের সপ্তম মাস এবং ধ্রুব শীতের সূচনা হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হয় যা বাংলার লোকজ ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে।

বাংলার উৎসব ও মেলা ২০২৫ : বাংলায় কার্তিক ও অগ্রহায়ন মাসের মেলা ও উৎসব (নভেম্বর) || Edik-Odik


কার্তিক মাসে প্রচলিত অন্যতম বড় উৎসব হল কার্তিক পূর্ণিমা, যা কার্তিক মাসের শেষ দিনে পালিত হয়। এই দিনে গঙ্গা ও অন্যান্য পবিত্র নদীতে স্নান করার প্রচলন আছে, যা পাপ মুছে দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়। 

এছাড়া দীপাবলি বা কালী পূজা ও লক্ষ্মী পূজা এই মাসের উল্লেখযোগ্য উৎসব, যেখানে দেবী কালী ও লক্ষ্মী পূজিত হন। ভাইফোঁটা উৎসবটি কার্তিকের একাদশীতে পালিত হয়, যা ভাই ও বোনের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ প্রকাশের প্রতীক।


অগ্রহায়ণ মাস বাংলা সনের অষ্টম মাস, যা বর্ষবরণের মাস হিসেবেও পরিচিত। অগ্রহায়ণ মাসে বাংলার পুজো ও মেলার মধ্যে শ্রীরাম নবমী, দেবউঠানি একাদশী, শুক্লাপক্ষের বিভিন্ন পুণ্যকাজ এবং বড়ি উৎসব থাকে। এই সময়ে গ্রাম বাংলায় মেলা ও বাজারের জাঁকজমক থাকে, যেখানে লোকশিল্প, বলি দেওয়া এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।


SIR 2025 Effects in West Bengal

সংক্ষেপে, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস বাংলার ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে উৎসব, পূজা আর মেলার মাধ্যমে মানুষ ধর্মীয় আত্মিকতা ও সামাজিক ঐক্য বজায় রাখে এবং শীতের উৎসবমুখর আনন্দ উপভোগ করে। এই মাসের উৎসবগুলো বাংলার সংস্কৃতির প্রকৃত পরিচয় বহন করে এবং ইহা বাংলার মানুষের জীবনে পরম আনন্দ ও উজ্জীবন নিয়ে আসে।


Explore Bihar's Top 10 Festivals (Bengali)

এখানে জেলা অনুযায়ী বাংলার উৎসব ও মেলার তথ্য দেয়া হল।


১৫ই নভেম্বর (২৮ কার্তিক ): 

বাংলার উৎসব ও মেলা-বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার অন্তর্গত শ্রীখণ্ড গ্রামে শ্রীচৈতন্য পার্ষদ বৈষ্ণব অধিকর্তা নরহরি সরকার ঠাকুরের তিরোভাব মহোৎসব ও মেলা।


১৬ই নভেম্বর (২৯ কার্তিক ) : 

বাংলার উৎসব ও মেলা-উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বরাহনগর আদ্যাপীঠে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠাতা শ্রীঅন্নদা ঠাকুরের আবির্ভাব মহোৎসব।


১৮ ই নভেম্বর (১ অগ্রহায়ন ): 

বরানগর শ্রীপাটবাড়িতে বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীপাদ রামদাস বাবাজী মহারাজের তিরোভাব তিথি উৎসব। 


হাওড়া জেলার খড়িয়াগ্রামে শ্রীশ্রী শ্মশানকালীমাতার পূজা উপলক্ষ্যে একমাসব্যাপী মেলা আরম্ভ। 


বর্দ্ধমান জেলার দুর্গাপুরে ফিরীঙ্গি শ্মশানকালীমাতার মন্দিরে বাৎসরিক পূজা ও উৎসব।


২০ নভেম্বর (৩ অগ্রহায়ন ) : 

মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ থানার দোগাছি গ্রামে অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যায় নিশিতে কালীপূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়। 


নদীয়া জেলার হাঁসখালি থানার পাটুলী গ্রামে অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যায় দক্ষিণা কালীর পূজা ও উৎসব।


২৮ নভেম্বর (৭ অগ্রহায়ন):

চন্দননগরে গোস্বামিঘাটে শ্রীবৃন্তীর মেলা।


দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বেহালায় বড়িশার চণ্ডীর মাঠে চণ্ডীদেবীর বার্ষিক পুজোৎসব ও মেলা। 

ব্রত প্রকরণ। শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর প্রতি বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা Sri Sri Laxmi Devi Bratakatha

 ব্রতকথা-

দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ। 

ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস। 


লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ। 

করিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন। 


সেইকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর। 

লক্ষ্মী নারায়ণে নমি কহিল বিস্তর। 


বাংলার ভৌতিক চরিত্রঃ

ঋষি বলে মাগো তব কেমন বিচার। 

সর্বদা চঞ্চলা হয়ে ফির দ্বারে দ্বার। 


মর্ত্যবাসী সন তাই ভুগিছে দুর্গতি। 

ক্ষণেকের তরে তব নাহি কোথা স্থিতি। 


প্রতিদিন অন্নভাবে সবে দুঃখ পায়। 

প্রতি গৃহে অনশন জীর্ণ-শীর্ণকায়। 


নারদের বাক্য শুনি লক্ষ্মী ঠাকুরাণী। 

সঘনে নিঃশ্বাস ত্যজি কহে মৃদুবাণী। 


কভুনা কাহার প্রতি আমি কবি রোষ। 

নরনারী দুঃখ পায় নিজ কর্মদোষ। 


যাও তুমি ঋষিবর ত্রিলোক ভ্রমণে। 

ইহার বিধান আমি করিব যতনে। 


অতঃপর চিত্তি লক্ষ্মী নারায়ণে কয়। 

কিরূপে হরিব দুঃখ কহ দয়াময়। 


হরি কহে শুন সতী বচন আমার। 

মর্ত্যবামে লক্ষ্মী রত করহ প্রচার। 


বৃহস্পতিবারে মিলি যত এয়োগণে। 

সন্ধ্যাকালে পুজি কথা শুনি ভক্তিমনে। 


বাড়িবে ঐশ্বর্য্য তাহে তোমার কৃপায়। 

দুঃখ কষ্ট দূরে যাবে তোমার দয়ায়। 


শ্রীহরির বাক্য শুনি আনন্দিত মনে। 

মর্ত্যে চলিলেন লক্ষ্মী ব্রত প্রচারণে। 


অবন্তী নগরে লক্ষ্মী হ'ল উপনীত। 

দেখিয়া শুনিয়া হ'ল বড়ই স্বস্তিত। 


নগরের লক্ষপতি ধনেশ্বর রায়। 

অগাধ ঐশ্বর্য্য তার কুবেরের প্রায়। 


সোনার সংসার তার শূন্য হিংসা দ্বেষ। 

প্রজাগণে পালিত সে পুত্র নির্বিশেষে। 


এক অন্নে সাত পুত্র রাখি ধনেশ্বর। 

যথাকালে সসম্মানে গেল লোকান্তর। 


পিতার মৃত্যুর পর সপ্ত সহোদর। 

হইল পৃথক অন্ন সপ্ত সহোদর। 


ক্রমে ক্রমে লক্ষ্মীদেবী ছাড়িল সবারে। 

সোনার সংসার সব গেল ছারখারে। 


বৃদ্ধা ধনেশ্বর পত্নী না পারি তিষ্ঠিতে। 

গহণ কাননে যায় জীবন ত্যজিতে। 


হেনকালে ছদ্মবেশে দেবী নারায়ণী। 

বন মাঝে উপনীত হলেন আপনি। 


মধুর বচনে দেবী জিজ্ঞাসে বৃদ্ধারে। 

কিজন্য এসেছ তুমি গ্রহণ কাস্তারে। 


কাঁদিতে কাঁদিতে বৃদ্ধা অতি দুঃখভরে। 

তাহার ভাগ্যের কথা বলিল লক্ষ্মীরে। 


সহিতে না পারি আর সংসার যাতনা। 

ত্যজিব জীবন আমি করেছি বাসনা। 


লক্ষ্মীদেবী বলে শুন আমার বচন। 

মহাপাপ আত্মহত্যা নরকে গমন। 


আমি বলি সাধবী তুমি কর লক্ষ্মীব্রত। 

দুঃখ রবি অস্ত যাবে হবে পূর্বমত। 


মনেতে লক্ষ্মীর মূর্তি করিয়া চিন্তন। 

একমনে ব্রতকথা করিবে শ্রবণ। 


যেই গৃহে লক্ষ্মীব্রত গুরুবারে হয়। 

বাঁধা থকে লক্ষ্মী তথা জানিও নিশ্চয়। 


বলিতে বলিতে দেবী নিজ মূর্তি ধরি। 

দরশন দিল তারে লক্ষ্মী কৃপা করি। 


মূর্তি হেরি বৃদ্ধা তাঁরে প্রণাম করিল। 

আনন্দিত হয়ে বৃদ্ধা গৃহেতে ফিরিল। 


গৃহেতে ফিরিয়া বৃদ্ধা করিল বর্ণন। 

যেরূপে ঘাটল তার দেবী দরশন । 


ব্রতের বিধান সব বধূদের বলে। 

শুনি বন্ধুগণ ব্রত করে কৌতূহলে। 


বধূগণ লয়ে বৃদ্ধা করে লক্ষ্মীব্রত। 

হিংসা দ্বেষ-স্বার্থ ভাব হৈল ডিরোহিত। 


মালক্ষ্মী করিল তথা পুনরাগামন। 

অচিরে হইল গৃহ শাস্তি নিকেতন। 


দৈবযোগে একদিন বৃদ্ধার আলয়ে। 

উপনীত এক নারী ব্রতের সময়ে। 


ব্রতকথা শুনি তার ভক্তি উপজিল। 

লক্ষ্মীব্রত করিবারে মানস করিল। 


স্বামী তার চিররুগ্ন অক্ষম অর্জনে। 

ভিক্ষা করি যাহা পায় খায় দুইজনে। 


এই কথা চিন্তি নারী করিছে কামনা। 

নিরোগ স্বামীরে কর চরণে বাসনা। 


ঘরে গিয়ে এয়ো লয়ে কর লক্ষ্মীব্রত। 

ভক্তিসহ সাধবী নারী পূজে বিধিমত।


দেবীর কৃপায় তার দুঃখ হলো দূর। 

পতি হলো সুস্থ দেহ ঐশ্বর্যা প্রচুর। 


কালক্রমে শুভদিনে জন্মিল তনয়। 

সংসার হইল তার সুখের আলয়।


 দয়াময়ী লক্ষ্মীমাতা সদয় হইল। 

রূপবান পুত্র এক তাহার জন্মিল। 


এইরূপে লক্ষ্মীরত করে ঘরে ঘরে। 

প্রচারিত হয় ক্রমে অবস্তী নগরে। 


শুন শুন এয়োগণ এক অপূর্ব ব্যাপার। 

ব্রতের মাহাত্ম হ'ল যে ভাবে প্রচার। 


অবন্তী নগরে এক গৃহস্থ ভবনে। 

এয়োগণ লক্ষ্মীব্রত করে একমনে। 


সহসা সেখানে এলো বণিক তনয়। 

উপনীত হলো তথা ব্রতের সময়। 


ধনরত্ন আদি করি ভাই পঞ্চজন। 

পরস্পর অনুগত রয় সর্বজন। 


ব্রত দেখি হেলা করি সাধুর তনয়। 

বলে একি রত, ইথে কিবা ফলোসায় । 


সদাগর বাক্য শুনি বলে বামাগণ। 

করি লক্ষ্মীব্রত যাতে কামনা পূরণ। 


এই ব্রত যে করিবে ধনে জনে তার।

লক্ষ্মী বরে হবে তার সোনার সংসার। 


শুনি তাহ্য সদাগর বলে অহঙ্কারে। 

যে জন অভাবে থাকে সে পূজে উহারে। 


ধনৈশ্বর্য্য ভোগ আদি যা কিছু সম্ভবে। 

সবই তো আমার আছে আর কিবা হবে। 


ভাগ্যে না থাকিলে লক্ষ্মী কিবা দিবে ধন। 

হেন কথা কভু আমি না শুনি কখন। 


অহঙ্কার বাক্য লক্ষ্মী সহিতে না পারে। 

গর্বের কারণে লক্ষ্মী ছাড়িল তাহারে। 


ধনমদে মত্ত হয়ে লক্ষ্মী করি হেলা। 

নানা রত্ন পূর্ণ তরী বাণিজ্যেতে গেলা। 


দৈবযোগে লক্ষ্মী কোপে সহ ধনজন। 

সপ্ততরী জলমধ্যে হইল নিমগন। 


গৃহমধ্যে ধনৈশ্বর্য যা ছিল তাহার। 

বজ্রাঘাতে দগ্ধ হয়ে হলো ছারখার। 


দূরে গেল ভ্রাতৃভাব হলো ভিন্ন অন্ন। 

সোনার সংসারে তার সকলে বিপন্ন। 


ভিক্ষাজীবী হয়ে সনে ফিরে ঘরে ঘরে। 

পেটের জ্বালায় ঘোরে দেশ দেশান্তরে।


এরূপ হইল কেন বুঝিতে পারিল। 

কেঁদে কেঁদে লক্ষ্মীস্তব করিতে লাগিল। 


সদয়া হইল লক্ষ্মী তাহার উপরে। 

পুনরায় কৃপা দৃষ্টি দেন সদাগরে। 


মনে মনে মা লক্ষ্মীরে করিয়া প্রণাম। 

রতের সঙ্কল্প করি আসে নিজ ধাম। 


লক্ষ্মীব্রত করে সাধ লয়ে বন্ধুগণ। 

সাধুর সংসার হলো পূর্বের মতন। 


এইভাবে লক্ষ্মীব্রত মর্ত্যেতে প্রচার। 

সদা মনে রেখো সবে লক্ষ্মীব্রত সার। 


এই ব্রত যেই নারী করে একমনে। 

লক্ষ্মীর কৃপায় সেই বাড়ে ধনে জনে।। 


করযোড় করি হাত ভক্তি যুক্ত মনে। 

করহ প্রণাম এবে যে থাক যেখানে। 


ব্রতকথা যেবা পড়ে যেবা রাখে ঘরে। 

লক্ষ্মীর কৃপায় তার মনোবাঞ্ছা পুরে। 


লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড় মধুময়। 

প্রণাম করিয়া যাও যে যার আলয়। 


লক্ষ্মী ব্রতকথা হেথা হৈল সমাপন। 

মনের আনন্দে বল লক্ষ্মীনারায়ণ। 


অথ প্রতি বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীদেবীর ব্রতকথা সমাপ্ত-

বিহারের ১০টি প্রধান উৎসব: সময়সীমা এবং উৎসবের বর্ণনা সহ পূর্ণ তালিকা

বিহারের মূল এবং সবচেয়ে পরিচিত উৎসবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল ছট পূজা। এছাড়াও আরও কিছু বিখ্যাত উৎসব ও মেলা প্রতিবছর বিহারে উদযাপিত হয:



বিহারের প্রধান উৎসবছট পূজা: সূর্য দেবতা এবং ছটি মাইয়ার আরাধনায় বিহারের সবচেয়ে পবিত্র ও প্রধান হিন্দু উৎসব। কঠোর উপবাস, নদীর ঘাটে উপাসনা, এবং প্রার্থনা এর বৈশিষ্ট্য।

ভারতের মহিলা ক্রিকেট টীম 

সামা-চাকেভা: প্রধানত মিথিলাঞ্চলে পালিত ভাই-বোনের সম্পর্কের সুন্দর উৎসব 


শ্রাবণী মেলা: দেবঘর, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের ধর্মস্থানে শিবের উপাসনার জন্য প্রসিদ্ধ সোনাপুর


শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর প্রতি বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা - Laxmi Brata

গরুর মেলা: এশিয়ার বিখ্যাত পশু মেলা


মকর সংক্রান্তি: ফসল তোলার উৎসব, মকর সংক্রান্তি মেলা এবং বিহুলা উৎসব


তীজ ও জিতিয়া: বিশেষত নারীদের উপবাস ও পারিবারিক মঙ্গল কামনায় পালন


রাজগীর মহোৎসব: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংস্কৃতির মেলাঅন্যান্য উদযাপিত উৎসব


বুদ্ধ পূর্ণিমা/বুদ্ধ জয়ন্তী: বোধ গয়াতে পালিত ঈদ, হোলি, দীপাবলি: অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব এই উৎসবগুলো বিহারি রা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও পরম্পরাগত ভাবে পালন করে, আর এগুলির সঙ্গে বিহারের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সামাজিক বন্ধন গভীরভাবে জড়িত।


প্রধান উৎসবগুলোর একটি বিশদ তালিকা ও সময় হলো:


ছট পূজা: অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পালিত হয়, যা বিহারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। সূর্য দেব ও ছটি মাইয়ার আরাধনায় এটি অনুষ্ঠিত হয়।


মকর সংক্রান্তি: প্রতি বছরের ১৩-১৪ জানুয়ারি (কখনো কখনো ১৫ জানুয়ারি), সূর্য কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ উপলে পালিত


হোলি: মার্চ মাসে, বিভিন্ন তারিখে পালিত যার মধ্যে হোলিকার দহন একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ


দীপাবলি: অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পালিত হয়।


মহাশিবরাত্রি: ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে, বিশেষ করে ভক্তদের মধ্যে প্রচণ্ড জনপ্রিয়


যতিয়া বা যতিয়া ব্রত: সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে পালন করা হয়, এটি মাতৃদেবতার প্রতি উৎসর্গীকৃত


দশেরা বা বিজয়দশমী: অক্টোবর মাসে পালিত।


করমা ও বিশ্বকর্মা পূজা, বর্ষা আর নবরাত্রি-সহ অন্যান্য উৎসবও বিহারে সফলভাবে পালন হয়।


প্রতিটি উৎসবের নির্দিষ্ট তারিখ মাস ও বর্ষ অনুসারে বদলায়, তাই বছরের নির্দিষ্ট তারিখ জানতে স্থানীয় ক্যালেন্ডার বা উৎসব তালিকা দেখতে হয়। এই উৎসবগুলোর সময় এবং ধরন বিহারের খাদ্য, সংস্কৃতি, ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। বিশেষত ছট পূজা বিহারের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক।

ইয়াক উৎসব ২০২৫ : সান্দাকফু তে তুষার পাত উৎসবের মেজাজ আলাদা

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সমতল থেকে প্রায় ১২০০০ ফুট উঁচু পর্বত সান্দাকফু ও ফালুটের বিভিন্ন হোটেল ও হোমস্টেতে এখন পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ছে। পর্যটকদের কাছে সান্দাকফু ও ফালুটের আকর্ষণ বাড়াতে গত রবিবার (১৩. ০৪. ২০২৫) থেকে ইয়াক বা চমরিগাই পর্যটন উৎসব শুরু হয়েছে। আর এরই মধ্যে দু'দিনের এই উৎসবের সূচনাতেই সান্দাকফুতে তুষারপাত পর্যটকদের বাড়তি উৎসাহ জুগিয়েছে।


ইয়াক বা চমরিগাই

ইংরেজি ভাষায় চমরী গাইকে 'ইয়াক' বলা হয়, যেটা পুরুষ এবং স্ত্রী দুটি প্রজাতিকেই বোঝায়, যদিও অন্যান্য ভাষায় "ষাঁড়" বা "গরু" পৃথক লিঙ্গ নির্দেশ করে। 'চমরী গাই' একটি দীর্ঘ কেশী গৃহপালিত প্রাণী যা ভারতীয় উপমহাদেশের হিমালয় অঞ্চল, তিব্বতি মালভূমি, উত্তর মায়ানমার, ইউনান, সিচুয়ান এবং মঙ্গোলিয়া এবং সাইবেরিয়া জুড়ে পাওয়া যায়।

ছবি : গুগল


সিঙ্গালিলা বনাঞ্চলে চমরিগাই অত্যন্ত পরিচিত নাম। আগে এই চমরিগাইকে ব্যবহার করেই পণ্য আনা নেওয়ার কাজ হত। সান্দাকফুতে ট্রেকিংয়ে যাওয়া পর্যটকদের ব্যাগপত্রও এই চমরিগাইয়ের পিঠে চাপিয়েই দুর্গম পথ বয়ে নিয়ে যাওয়া হত। বছর কয়েক আগে চমরিগাই মাধ্যমে গণ্য পরিবহণের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। সিঙ্গালিলার বনবস্তিতে বসবাসকারীরা, অনেকেই বাড়িতে চমরিগাই পালন করে সংসার চালান। চমরিগাই নিয়ে বাড়ির কর্তা গাইড হিসাবে ট্রেকারদের সঙ্গ দিয়ে রোজগারের সুযোগ পেতেন। কিন্তু এখন সেই পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।


চমরিগাই দের নিয়ে পর্যটন

এরই পাশাপাশি আরও একটা দিক খুলে গিয়েছে তা হল এই চমরিগাই দের নিয়ে পর্যটন। চমরিগাইকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। সান্দাকফু, ফালুট পর্যটনস্থলের আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে আরও বাড়াতেই এই চমরিগাই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।


এই উৎসবে অংশ নিতে গোটা এপ্রিল মাস জুড়েই এই অঞ্চলে হোটেল, লজগুলির বুকিং পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। 


থাকুমে চমরিগাই পর্যটন উৎসব

প্রতি বছর থাকুমে চমরিগাই পর্যটন উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবার এই উৎসব অষ্টম বর্ষে পা দিয়েছে। এবারের উৎসবে পর্যটকরা প্রায় ১৩০টি চমরিগাইয়ের দর্শন সান্দাকফুতে বছরে পাবেন। পাশাপাশি চমরিগাইয়ের দুধ থেকে তৈরি সুরপি, দই, ঘি, চিজ সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থাও থাকছে। উৎসবের শুরুতেই রবিবার সান্দাকফুতে বছরের দ্বিতীয় তুষারপাত চাক্ষুস করে পর্যটকরা ব্যাপক খুশি।


এবারে উৎসবের পাশাপাশি সান্দাকফুর ঐতিহ্যবাহী ল্যান্ড রোভার গাড়িতে চড়ার সুযোগও মিলছে। এই উৎসবের যোগ দিতে গত শনিবার (১২. ০৪. ২০২৫) সকালে দার্জিলিং থেকে ঘুম হয়ে প্রচুর পর্যটক ল্যান্ড রোভারে চেপে ফালুটে পৌঁছেছেন। রবিবার তাঁরা ফালুট থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকুমে উৎসবে যোগ দেন। সেখান থেকে পর্যটকরা সান্দাকফুতেও যাবেন।


সান্দাকফুতে হোটেল ও লজ 

উৎসবে অংশ নিয়ে চমরিগাই দেখার আনন্দ নিতে সান্দাকফুতে অনেক পর্যটক আগেই পৌঁছে গিয়েছেন। তবে সান্দাকফু, থাকুম, ফালুটে খুব বেশি পরিমাণে হোটেল, লজের ব্যবস্থা না থাকায় বহু পর্যটককে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না বলে উৎসবের আয়োজকরা জানিয়েছেন।


সিঙ্গালিলা ল্যান্ড রোভার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কথায়, 'এখন যে পর্যটকরা উৎসবে যেতে চাইছেন, তাঁদের সকালে গিয়ে বিকেলে দার্জিলিং ফিরে আসতে হবে। কেননা আগামী কয়েকদিন ওই এলাকায় রাত্রীযাপনের জন্য কোনও হোটেল, লজে আর জায়গা নেই।

Maha Kumbha Mela 2025 : এবারে চমকে দেবার মত বিশেষ কিছু তথ্য

 "কুম্ভমেলা" হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থযাত্রা, যা প্রতি ৩, ৬, ১২ এবং ১৪৪ বছরে একবার পালিত হয়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। মেলাটি চারটি তীর্থস্থানে অনুষ্ঠিত হয়: প্রয়াগরাজ (যেখানে গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর মিলন), হরিদ্বার (গঙ্গা নদী), নাসিক (গোদাবরী নদী) এবং উজ্জয়িনী (শিপ্রা নদী)" (তথ্য : উইকিপেডিয়া )

আরও পড়ুন : ডাবল ডেকার রুট ব্রিজ 



কুম্ভ মেলার প্রকারভেদ :

কুম্ভ মেলা চার প্রকারের হয় এগুলো হল কুম্ভ মেলা, অর্ধ কুম্ভ মেলা, পূর্ণ কুম্ভ মেলা এবং মহা কুম্ভ মেলা। কুম্ভ মেলার আয়োজন প্রতি তিন বছর অন্তর হয়। ১২ বছরে তিন বার কুম্ভ মেলা বসে। এই মেলা প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক এবং উজ্জয়িনী তীরে বসে।


অর্ধ কুম্ভ মেলা ১২ বছরে দুবার হয় আর এই কুম্ভ মেলা কেবলমাত্র প্রয়াগরাজ ও হরিদ্বারে হয়।


পূর্ণ কুম্ভ মেলা প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক এবং উজ্জয়িনী তীরে বসে জোতিষ গণনার মাধ্যমে ১২ বছরে একবার।


মহা কুম্ভ মেলা শুধুমাত্র প্রয়াগরাজেই আয়োজন করা হয় ১৪৪ বছর পর অর্থাৎ ১২ টি পূর্ণ কুম্ভের পর।

আরও পড়ুন : ভ্ৰমণ : চারখল 



২০২৫ এর মহাকুম্ভের সময় সীমা :

১৩ জানুয়ারি থেকে প্রয়াগরাজে মহা কুম্ভ মেলা শুরু হয়েছে, যা ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রায় ৪৫ দিন ধরে চলা এই বৃহত্তম ধর্মীয় মেলায় ৪০ কোটিরও বেশি মানুষ পবিত্র সঙ্গমস্থলে ডুব দেবেন।

 

প্রয়াগরাজ : হোটেল ও ধর্মশালা :

এবারে কুম্ভ মেলা আসলে মহাকুম্ভ মেলা, আর উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ শহরে ২১৮টি হোটেল, ২০৪টি গেস্ট হাউস এবং ধর্মশালা রয়েছে। প্রতিটি হোটেলেই তিল ধারণের কোনো জায়গা নেই প্রায়।


জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত হোটেলের রুমের দাম বহুগুণ বেড়েছে। যে হোটেল রুমগুলি ২৪ ঘণ্টায় ৭-৮ হাজার টাকায় পাওয়া যেত, সেগুলি এখন পাওয়া যাচ্ছে ৪৫ হাজার টাকায়। তবে এই রেট শুধুমাত্র মৌনী মকর সংক্রান্তি, অমাবস্যা, বসন্ত পঞ্চমীর মতো বিশেষ স্নান উৎসবের জন্যই অত্যধিক বেশি।

আরও পড়ুন : ভ্রমণ : উত্তরবঙ্গের কালিপুর 


এই মেলা থেকে সরকারের আয় :

মহাকুম্ভ মেলা বিশ্বের বৃহত্তম অস্থায়ী শহরের সমতুল্য। যেখানে যেকোনও সময়ে একত্রে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি মানুষের থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।


প্রশাসনের হিসাব বলছে, মহাকুম্ভ মেলার এই বিরাট, বিপুল আয়োজনের মাধ্যমেই উত্তরপ্রদেশ 


 সরকারের প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে! 


সংবাদ সংস্থা আইএনএস-এর হিসাব অনুসারে, যদি মহাকুম্ভে আসা পুণ্যার্থী ও ভক্তরা তাঁদের গড় খরচ বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা করেন, তাহলেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের আয় এক লাফে বেড়ে দ্বিগুণ - প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা হবে! তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, এই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হলে সাধারণ এবং রিয়েল জিডিপি ১ শতাংশেরও বেশি বাড়বে।


এই মেলার সময়টায় বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় - যার মধ্যে রয়েছে প্যাকেট  বন্দি খাবার, জল, বিস্কুট, জুস এবং ভরপেট খাবার বা মিল - এই সবকিছুর বেচাকেনা করেই প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে।


এছাড়াও, পুজোর সামগ্রী বেচা-কেনা করেও ভালোই লক্ষ্মীলাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরনের পণ্যের মধ্যে থাকছে - তেল, প্রদীপ, গঙ্গাজল, মূর্তি, লাঠি, ধর্মীয় বইপত্র প্রভৃতি। এসবের ব্যবসা করে আরও প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে।

আরও পড়ুন : দেখুন উত্তরবঙ্গের তিস্তা বুড়ির নাচ 

আরও পড়ুন : ডুয়ার্স এ এবার হাতি কে স্নান করান সঙ্গে এলফির মজা নিন 


এছাড়াও রয়েছে পুণ্য়ার্থীদের যাতায়াত, থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা সংক্রান্ত খরচপাতি ও তার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যবসা। এসব থেকে অন্তত ১২,০০০ কোটি টাকা রোজগার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


পাশাপাশি, মহাকুম্ভ মেলার ফলে শুধুমাত্র পর্যটন ব্যবসার অধীনেই আরও ১৫,০০০ কোটি টাকার লেনদেন হবে। এর মধ্য়ে রয়েছে - প্যাকেজ ট্যুর, গাইডের খরচ প্রভৃতি।


অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প, বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক পণ্য এবং ওষুধপত্র বিক্রি আরও প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা রোজগার হবে রাজ্যের।


অন্যদিকে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রত্যক্ষ ব্যবহার করেও প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা রোজগার হবে। যার মধ্যে রয়েছে - ই-টিকেটিং, ডিজিট্যাল পেমেন্ট, ওয়াই-ফাই পরিষেবা, মোবাইল চার্জিং প্রভৃতি।


এছাড়াও, বিজ্ঞাপন ও বিপণনের মাধ্যমে আরও প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকার কারবার হবে।


কুম্ভ ঘিরে পারদের মতো চড়েছে দাম। ভোপাল থেকে প্রয়াগরাজ যেতে বিমানের খরচ পড়ছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই দাম পড়ছে ১৬ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন : উত্তরবঙ্গের লুপ ব্রিজ, এক দর্শনীয় স্থান 

২০১৯ এ অর্ধকুম্ভ মেলা থেকে কত আয় হয়েছিল :

২০১৯ সালে প্রয়াগরাজে যে অর্ধকুম্ভ মেলা হয়েছিল, তার ফলে রাজ্যের রোজগার হয়েছিল প্রায় ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। সেবারের সেই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২৪ কোটি ভক্ত ও দর্শনার্থী।


আগ্রহী অন্যান্য দেশ :

কুম্ভ মেলা (Kumbh Mela) নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। বিষয়টি শুনতে অবাক লাগলেও এমনই তথ্য সামনে এসেছে। আসলে ট্রেন্ডিং টপিক সার্চের কুম্ভ মেলা নিয়ে যে দেশ সবচেয়ে বেশি সার্চ করেছে সেটি হচ্ছে পাকিস্তান। শুধু পাকিস্তানই নয় এই তালিকায় নাম লিখিয়েছে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, বাহরিন।


মহাকুম্ভ মেলায় আকর্ষণ :

মহাকুম্ভ মেলায় অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রে হর্ষা রিচারিয়া। তাঁর নানা ভিডিয়ো ভাইরাল হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছেন এই সাধ্বী। কে এই হর্ষা রিচারিয়া যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা? একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, অ্যাঙ্কর হয়ে উঠেছেন সাধ্বী…।


ভাইরাল গার্ল মোনালিসা 

মোনালিসা এবারের কুম্ভ মেলায় মালা বিক্রি করতে এসেছেন। তাঁর কয়রা চোখের এবং তাঁর সুন্দরতা নেটিজেনদের মুগ্ধ করেছে এবং যথারীতি তিনি ভাইরাল হয়েছেন। তাঁর অসংখ্য ভিডিও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মাত করে রেখেছে। 


আবার কবে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে?

প্রয়াগরাজের পরে কোথায় কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে?

প্রয়াগরাজের পরবর্তী কুম্ভ মেলা ২০২৭ সালে মহারাষ্ট্রের নাশিকে অনুষ্ঠিত হবে। এই কুম্ভ মেলা ১৭ আগস্ট মঙ্গলবার শ্রাবণ মাসের শেষ দিন অর্থাৎ শ্রাবণ পূর্ণিমা থেকে শুরু হবে, যা এক মাস স্থায়ী হবে। কুম্ভ মেলার প্রথম দিনে রাখিবন্ধন উৎসবও পালিত হবে। এই সময় লোকেরা গোদাবরী নদীর তীরে স্নান করে পবিত্র ডুব দেবেন। নাশিক ভারতের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শহর। নাশিকে ত্র্যম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গও রয়েছে।


২০২৮ সালে কোথায় কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে? 

নাশিকের পরবর্তী কুম্ভ মেলা ২০২৮ সালে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে অনুষ্ঠিত হবে। এই কুম্ভ মেলা চৈত্র মাসের পূর্ণিমা থেকে শুরু হবে অর্থাৎ ৯ এপ্রিল থেকে। এই কুম্ভ মেলা বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা পর্যন্ত চলবে। এই সময় লোকেরা পবিত্র ক্ষিপ্রা নদীতে ডুব দেবেন। উজ্জয়িনী কুম্ভের সময় ক্ষিপ্রা নদীর রামঘাটে স্নান করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। উজ্জয়িনীতে মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ স্থাপিত। এছাড়াও এখানে হরসিদ্ধি শক্তিপীঠও রয়েছে।


হরিদ্বারে কবে কুম্ভ অনুষ্ঠিত হবে?

প্রয়াগরাজ, নাশিক এবং উজ্জয়িনী ছাড়াও হরিদ্বারেও প্রতি ১২ বছর অন্তর কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২০৩৩ সালে হরিদ্বারে কুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এই কুম্ভ মেলা ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে, যা ১৫ মে পর্যন্ত চলবে। এক মাসব্যাপী এই কুম্ভ মেলায় লোকেরা পবিত্র গঙ্গা নদীতে স্নান করবেন। এটি পূর্ণ কুম্ভ হবে। হরিদ্বারকে ভগবান বিষ্ণুর নগরীও বলা হয়।


Kumbha Mela Bengali Article 

Swaraswati Puja 2025 : জেনে নিন বাগদেবীর পুজো মুহূর্ত থেকে পুজো মন্ত্র

বাঙালি সারাবছরই কোনো না কোনো উৎসবের অঙ্গে জড়িয়ে থাকে। আর স্বরস্বতী পূজো মানেই ছেলে মেয়েদের বই খাতা মায়ের চরণে দিয়ে দু একদিনের জন্য হই হুল্লোড় করা। কচি থেকে বড়, মেয়েদের শাড়ী আর ছেলেদের পাঞ্জাবী পড়ার বাহার। স্বরস্বতী পূজো মানেই সারাদিন আড্ডা, স্কুল কলেজে ও অন্য জায়গায় ঠাকুর দেখা, খাওয়া দাওয়া গান বাজনা। 

Swaraswati Puja 2025 Edik-Odik


হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে, দেবী সরস্বতীর কাছে বুদ্ধি এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রার্থনা করা হয়। সঙ্গীত, শিল্প ও সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই দিনে বিশেষ পুজো করেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ দিন। 


২০২৫ সালে সরস্বতী পুজোর দিনক্ষণ 

২০২৫ সালে সরস্বতী পুজোর জন্য ৩ ঘন্টা ২৬ মিনিট সময় থাকবে। সরস্বতী পুজো মুহূর্ত ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ০৯ টা ১৪ মিনিট থেকে ১২ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। 

আরও পড়ুন : ২০২৪ এ সর্বাধিক আয় করেছিল ভারতের যে সিনেমা 


প্রচলিত হিন্দু রীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে, সরস্বতী পুজোর দিনটি শিশুদের শিক্ষা ও বিদ্যা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি শুরু করার জন্য একটি অত্যন্ত শুভ দিন বলে মনে করা হয়। এছাড়াও এই পবিত্র দিনটি ব্যবসা, স্কুল প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি নতুন কাজ শুরু করার জন্যও শুভ বলে বিবেচিত হয়।

Bag Devi Aradhana 2025


পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী পালিত হয়। 


এবছর কখন পূজা তিথি :

২০২৫ সালে, মাঘ পঞ্চমী তিথি ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ০৯ টা ১৪ মিনিট থেকে শুরু হবে, যা পরের দিন অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ০৬ টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এ বছর ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার সরস্বতী পুজো উদযাপিত হবে। এই দিনে জ্ঞানের দেবী মা সরস্বতীর পুজো করা হয়। মা সরস্বতীর একটি নাম হলশ্রী, তাই এই দিনটিকে শ্রী পঞ্চমীও বলা হয়।

আরও পড়ুন : সরকারি প্রকল্প - মা কি রসই ২০২৫


বসন্ত পঞ্চমীর তাৎপর্য: 

বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীকে অবুঝ মুহূর্ত হিসাবে বিবেচনা করা হয়, অর্থাৎ এটি বছরের সেই বিশেষ দিনগুলির মধ্যে একটি, যেদিন পঞ্চাঙ্গের দিকে না তাকিয়ে যে কোনও শুভ কাজ করা যেতে পারে। এই দিনে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান বিশেষভাবে অনুকূল থাকে। বসন্ত পঞ্চমীর দিন, চাঁদও একটি শুভ অবস্থানে থাকে, যা মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি নিয়ে আসে। এই দিনে হলুদ কাপড় বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করা হয়, যা বৃহস্পতি গ্রহের প্রতীক এবং যা জ্ঞান, শুভ ও সৌভাগ্য নিয়ে আসে।


বসন্ত পঞ্চমীর দিন থেকে ঋতু পরিবর্তন হয় এবং ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটে। গাছ এর পুরানো পাতা ঝরে নতুন অঙ্কুর গজায়। কোকিলের তান আর মহুয়া ও অন্যান্য ফুলের সুবাসে গোটা পরিবেশ মুখরিত থাকে। তাই বসন্ত পঞ্চমীকে বলা হয়েছে প্রকৃতির উৎসব। এই দিন থেকে, সূর্যের রশ্মি শক্তিশালী হতে শুরু করে যাতে কনক ফসল অর্থাৎ গম সোনার মতো পাকে এবং গৃহ ধন-শস্যে ভরে যায়। ক্ষেতে হলুদ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য বসন্ত পঞ্চমীর হলুদ রঙের প্রতীকের সঙ্গে যুক্ত।

আরও পড়ুন : উত্তরবঙ্গের লুপ ব্রিজ, এক দর্শনীয় স্থান 


হিন্দু ধর্মে, বসন্ত পঞ্চমী একটি উৎসব যা জ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সঙ্গমের প্রতীক। এটি একটি নতুন সূচনা এবং জ্ঞান অর্জনের দিন। বসন্ত পঞ্চমীর শুধু ধর্মীয় নয়, জ্যোতিষশাস্ত্রের দিক থেকেও তাৎপর্য রয়েছে। এই দিনটি জ্ঞানের দেবী মা সরস্বতীকে উৎসর্গ করা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালের বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজো কখন, এই দিনের ধর্মীয় ও জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাৎপর্য কী এবং পুজোর শুভ সময় কখন জেনে নিন। 


জেনে নেয়া যাক স্বরস্বতী পূজার কিছু মন্ত্র 


পুস্পাঞ্জলি মন্ত্র

ওঁ ভদ্র কাল্যই নমঃ নিত্যং 

সরস্বতঃই নমঃ নমোঃ 

বেদ বেদান্ত বেদাঙ্গ 

বিদ্যাস্থানিভ্য 


এবচ এসঃ সবচন্দনঃ 

পুষ্প বিল্বপ্ত্র পুস্পাঞ্জলি 

ওঁ ঔঁ শ্রী শ্রী সরস্বতঃই নমঃ নমোঃ।। 


প্রনাম মন্ত্র

জয় জয় দেবি চরাচর সারে, 

কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে 

বীণা পুস্তক রঞ্জিত হস্তে 

ভগবতি ভারতি দেবি নমোহস্তুতে ।।


ওঁ সরস্বতি মহাভাগে 

বিদ্যে কমললোচনে 

বিশ্বরূপে বিশালাক্ষি 

বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে।।


কোন ফুলে দেবী স্বরস্বতীর পূজা হয় :

প্রতি বছর বসন্ত কালেই পড়ে স্বরস্বতী পুজোর তিথি। আর বছরের এই সময়েই বিশেষত রাঙা হয়ে ফোটে পলাশ ফুল। তাই মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীকে এই পলাশ ফুল অর্পণ করার রীতি যুগ যুগ ধরে।

আরও পড়ুন : শীতের পিকনিক সঙ্গে কোন ভোজপুরি গান বাজাবেন?

পলাশ ফুল সরস্বতী পুজোর অন্যতম প্রধান উপচার। সরস্বতী পুজোতে পলাশ ফুল দিতেই হয়!।


পলাশ ফুলের উপকারিতা 

পলাশ ফুল অনেক জায়গায় তেসু নামেও পরিচিত। পলাশ ফুলেরও অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। পলাশ গাছের ফুল, বীজ এবং শিকড় থেকে ওষুধ তৈরি করা হয় এবং এটি আয়ুর্বেদে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

শীতের মরসুম ২০২৪ : পুলি পিঠে পায়েস ও নলেন গুরের মাহাত্ম

ব্রিটানের রানী এলিজাবেথ একবার সুস্বাদু নলেন (Nalen Gur) গুড়ের পাটালি (Date Palm Jaggery Brick) খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। শীত চলে এসেছে আর সঙ্গে বাঙালি বাড়ীতে পুলি পিঠা পায়েসের ধুম পরে গিয়েছে যার সঙ্গে নিবিড় ভাবে জুড়ে রয়েছে নলেন গুড়। 

এতে কোনো সংশয় নেই যে আজ বাংলার খেজুর (Khejur) রস থেকে গুড়, পাটালি, মিষ্টি, মোয়া, দই, কেক, আইসক্রিম ইত্যাদি একটি শিল্পের জায়গায় পৌঁছে গেছে। নলেন বা খেজুর গুড় মূলত ধরণের পাওয়া যায় তরল যা ঝোলা গুড় এবং শক্ত বা পাটালি গুড়। ১০০ গ্রাম গুড় এর মধ্যে ৩৫৫ কিলো কালোরি এনার্জি থাকে যেখানে ৮৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট . ৬৯ গ্রাম প্রোটিন বর্তমান।

 

এই আর্টিকেল থেকে নলেন গুড় নিয়ে আমরা যে বিষয় গুলি জানতে পারবো 

- শিউলি বা গাছি 

- নলেন গুড়ের নামকরণ 

- নলেন গুড় উৎপাদনের সময় 

- প্রকৃতির মার উৎপাদনে ঘাটতি 

- খেজুর রস থেকে গুড় তৈরি করার পদ্ধতি 

- খেজুর / নলেন গুড়ের উপকারিতা

- যে স্থান গুলিতে ভালো মানের খেজুর গুড় পাওয়া যায় 

- নলেন গুড় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

- খেজুর নলেন গুড় থেকে তৈরি হওয়া খাবারের তালিকা 

- নলেন গুড় তার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্ম সংস্থান 

- নলেন গুড়ের ইতিহাস সাহিত্য সিনেমা 

- নলেন গুড়ের গান 

আরও পড়ুন : রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি চাল অতুলনীয় স্বাদ ও সুগন্ধির জন্য বিশ্ব বাজারে সমাদৃত, কি এর গুণাবলী? কত চাষ হয়? 

শিউলি বা গাছি 

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ সেখান থেকে গুড় তৈরি করে মোটেও সহজ কাজ নয়। পৌষ মাঘ মাসের কোন কোনে ঠান্ডায় আমরা যখন লেপ মুড়ি দিয়ে আরামে ঘুমোই তখনি শুরু হয় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার কাজ। আর এই কাজ টি যারা করে থাকেন তাঁদের আমরা শিউলি (Siuli) বা গাছি (Gachi) বলে থাকি। যদিও অশ্বিন মাস থেকেই এই কর্মযোগ্য অর্থাৎ রস সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়ে যায়। সারা বছর অন্যান্য কাজ করে থাকলেও এই ছয় মাস শিউলিরা এই কাজেই মনোনিবেশ করে। যদিও এদের জীবন সংগ্রাম খুব কষ্টের এবং অনটনের। গাছি বা শিউলিরা যে সকলেই নিজের নিজের জায়গায় কাজ পান তা নয়, অনেকেই অন্য জেলায় গিয়ে কাজ করেন।

নলেন গুড়ের নামকরণ 

রুক্ষ প্রান্তরে মূলত খেজুর গাছ পাওয়া যায়। যার যত গুলো গাছ আছে, শিউলিরা চেষ্টা করেন সেগুলো রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা। অশ্বিন কার্তিক মাসেই গাছের ওপরের অংশ চেঁছে ফেলা হয়। তারপর সেই অংশে নল ঢুকিয়ে মাটির কলসি বেঁধে দেয়া হয়। অনেকেরই ধারণা যে এই নল থেকেই নলেন গুড়ের নামকরণ।

নলেন গুড় উৎপাদনের সময় 

ডিসেম্বর থেকে ফ্রেব্রুয়ারী এই তিনমাস খেজুর গুড়ের প্রাকৃতিক যোগান, যার উপর নির্ভর করে বাংলায় কয়েকটি রাজ্যে তৈরি হয় নলেন পাটালি গুড়। উৎকৃষ্ট মানের রস আরও কম সময়ের জন্য পাওয়া যায় - ডিসেম্বর ১০ তারিখ থেকে এর পর মাত্র ৬০ দিন। 

 

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আবহাওয়ার গতি শীতের মেয়াদ অনুযায়ী একটি গাছ থেকে দৈনিক প্রায় চার কেজি উৎকৃষ্ট মানের রস পাওয়া যেত। বর্তমানে সেই পরিমান আড়াই থেকে তিন কেজি তে ঠেকেছে। একটি খেজুর গাছ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত রস উৎপাদন করতে সক্ষম।

খেজুর রস থেকে গুড় তৈরি করার পদ্ধতি 

যত শীত পরে রসের স্বাদ ততো ভালো হয়। একবার কাটার পর পরপর তিন দিন রস মেলে। প্রথম দিনের

রসকে বলা হয় জিরেনকাট, যা সব থেকে সুস্বাদু। দ্বিতীয় তৃতীয় দিনের রস কে যথাক্রমে বলা হয় ডোকাট তেকাট। খুব ভোর থেকে এই রসকে জ্বাল দিয়ে গুড় বানানোর কাজ শুরু করতে হয়। এই কাজের জন্য শিউলিরা খেজুর গাছের কাছেই ফাকা মাঠে খেজুর পাতায় আগুন জ্বালিয়ে গুড় বানানোর কাজ করে থাকে।



খেজুর / নলেন গুড়ের উপকারিতা

- ওজন কমাতে সাহায্য করে।

- ঠান্ডায় কাশি সর্দি নিরাময় করে।

- হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

- খেজুর গুড় খেলে শরীরে আইরন এর ঘাটতি দূর হয়। 

- লিভার ভালো রাখে, শরীরকে শক্তিশালী সতেজ করে তোলে।

- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

- আজমা দূর করে।

- ত্বক কে ভালো রাখে।

যে স্থান গুলিতে ভালো মানের খেজুর গুড় পাওয়া যায়  

উত্তর দিনাজপুর জেলা :

দিনাজপুর জেলায় কুনোর গ্রাম, কালিয়াগঞ্জ ব্লকে আশ্রমপাড়া নামক একটি জায়গা আছে, যেখানে বংশ পরম্পরায় খেজুর গুড়ের ব্যবসা করে চলে আসছে অনেক পরিবার। এলাকায় পুরুষ সদস্যদের সাথে সাথে মহিলারাও এই ব্যাবসায় সহযোগিতা করেন। কুনোর গ্রামের  সুস্বাদু গুড়, পাটালি শুধুমাত্র পাশের জেলা নয় এমন কি কলকাতা সুদূর অন্য রাজ্যেও পৌঁছে যায়। 

জলপাইগুড়ি জেলা :

বর্তমানে উত্তর বঙ্গের কোনো অঞ্চলকে খেজুর গুড়ের জন্য দক্ষিণ বঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। গজলডোবায় নলেন গুড়ের ব্যবসা বেশ রমরমা। বহু পরিবার এই ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত। এখানকার গুড় পাশের জেলা নয় কলকাতা সহ অন্য রাজ্যেও পৌঁছে যাচ্ছে। 

 

মালদা জেলা :

যাত্রাভাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এর দুর্গাপুর গ্রাম।

বামনগোলা, হবিবপুর এইসব ব্লকে প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। 

এছাড়া রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া মুর্শিদাবাদ জেলার বসিরহাট, মোছলন্দপুর, জয়নগর লালগোলা। 

নলেন গুড় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট 

এক কেজি ভালো মানের গুড়ের জন্য থেকে কেজি রসের প্রয়োজন। বাজারে ভালো মানের গুড়ের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সুন্দর বন ২৪ পরগনা জেলার একটি সার্ভেতে জানা গিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে ধানের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অর্থকরী ফলের গাছ হল খেজুর। 


খেজুর নলেন গুড় থেকে তৈরি হওয়া খাবারের তালিকা 

গুড়ের সন্দেশ 

গুড়ের রাসাগোল্লা 

গুড়ের পায়েস 

গুড়ের মিষ্টি দই 

পিঠা, পুলি, পাটিসাপ্টা, লাড্ডু, কেক, মোয়া।

(খেজুর নলেন গুড়ের বিভিন্ন খাবার আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকেও অনলাইন পাওয়া যাচ্ছে।)

বর্তমানে বিশেষ আকর্ষণ নলেন গুড়ের চা।

নলেন গুড় তার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্ম সংস্থান 

সরকারি বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগে হাজারো ভেজাল থেকে আলাদা করে খাঁটি স্বাস্থ্য সম্মত খেজুর গুড় উৎপাদন করার জন্য শিউলি গাছি দের প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর আওতাই ৪০০ থেকে ৫০০ জন ক্ষুদ্র চাষী খেজুর মালিকদের নিয়ে সমবায় পদ্ধতিতে গুড় তৈরি বিপননের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

নালেন গুড়ের ইতিহাস সাহিত্য সিনেমা 

ইতিহাসবিদ নিহার রঞ্জন রায়ের 'বাঙালির ইতিহাস আদিপর্ব ' থেকে জানা যায় ৮০০ বছর আগে 'সদুক্তিকণামৃত' তে নলেন গুড়ের ভুয়সী প্রশংসা রয়েছে। সত্তর দশকের অমিতাভ বচ্চন, নুতন, পদ্মা খান্না অভিনীত 'সৌদাগর' ছবি এখনো সকলের কাছে সমান ভাবে সমাদৃত, যা শিউলি দের জীবন জীবিকা নিয়ে চিত্রায়িত।

উপসংহার 

তাই পরিশেষে ভেজাল বা সস্তার গুড় থেকে বিরত থাকুন, ন্যায্য দামে খাঁটি খেজুর গুড়ের সন্ধানে থাকুন। আর খাঁটি গুড় চিনবেন কিভাবে? গুড় খাঁটি হলে হালকা চাপ দিলেই ভেঙে যাওয়ার কথা। আলতো করে আঙুলের চাপ দিলেই যদি গুড় ভেঙে যায়, তাহলে বুঝবেন সেই পাটালি গুড় খাঁটি। খেজুর গুড়ের গন্ধ আপনার মন জুড়িয়ে দেবে এটা যেমন সত্যি, তেমনই সত্যি হলো গন্ধ শুঁকেই মজে গেলে হবে না। কারণ আসল গন্ধ না বুঝে কিনে ফেললে ঠকে যাওয়ার ভয় থাকতে পারে। অনেক সময় গুড়ের কৃত্রিম সুবাস আনার জন্য রাসায়নিক মেশানো হয়। তাই গন্ধ শুঁকেই সেই গুড় খাঁটি বলে ধরে নেবেন না।

 

আর শীত মানেই বাঙালির পুলি পিঠে, পাটিসাপ্টা, মালপোয়া, পায়েস আর মনের মধ্যে গান ধরা।

খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন

খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন,

নইলে রস গড়িয়ে,

নইলে রস গড়িয়ে গোড়া পচে 

অকালে হবে মরণ

খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন

খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন।