হলুদের গুন আরও বাড়বে! সঙ্গে আর কি কি উপাদান যোগ করতে হবে?

খাবারে হলুদ মেশালে খাবারে রং এর সাথে স্বাদের ভিন্নতা আসে। আর শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়া যে উপকারী তা সকলেরই জানা। কেউ কেউ সকালে খালিপেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খান, আবার অনেকে গরম জলে বা দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে খান। হলুদের মধ্যে প্রচুর আন্টিএক্সিডেন্ট বর্তমান। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে এর অসংখ্য উপকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে। স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর এই হলুদের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু হলুদের সঙ্গে আর কিছু উপাদান যা একসঙ্গে খেলে এই হলুদের গুন আরও বাড়িয়ে তোলে, এখানে দেখে নেয়া যাক।

হ্যাঁ, হলুদের সঙ্গে গোলমরিচ খেলে উপকারিতা মেলে কয়েক গুণ বেশি। আসলে হলুদ এবং গোলমরিচ, এই দুটি উপাদানই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু দুটি উপকারী মশলা আলাদাভাবে না খেয়ে কেন একসঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়?

আরও পড়ুন : আপনার স্মার্ট ফোনে রয়েছে খাঁটি সোনা 

একাধিক অসুখ-বিসুখের মোকাবিলা:

হলুদে রয়েছে কারকুমিন নামে এক ধরনের উপাদান। হলুদের উপকারিতা অনেকটাই নির্ভর করে এই কারকুমিনের ওপর। কিন্তু কারকুমিন নিজে থেকে শরীরে ভালভাবে মিশতে পারে না। যা গোলমরিচের সঙ্গে খেলে কারকুমিন পুরোপুরি শরীরে মিশে যায়। শরীরের একাধিক অসুখ-বিসুখের মোকাবিলা করতে রান্নার এই দুই উপকরণ রীতিমত ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে।

আরও পড়ুন : সজনে পাতার উপকার 

ব্যথা-বেদনা সারাতে হলুদ ব্যবহার

বহুকাল ধরে ব্যথা-বেদনা সারাতে হলুদ ব্যবহার করা হয়। আসলে হলুদ শরীরকে ভিতর থেকে সারিয়ে তোলে। তার সঙ্গে গোলমরিচ যুক্ত করলে আরও তাড়াতাড়ি কাজ হয়। গোলমরিচের মধ্যে থাকা পাইপারিন কোষকে সক্রিয় করে তোলে। দীর্ঘদিনের ব্যথা বা নার্ভ সংক্রান্ত যন্ত্রণাও সারিয়ে দেয় এই দুই মশলা। আয়ুর্বেদে আর্থারাইটিসের যন্ত্রণা কমাতে হলুদের ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। দুটি কালো গোলমরিচ হলুদের সঙ্গে যোগ করে খেলে তা গলা ব্যথা ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত হলুদ :

হলুদ ও গোলমরিচ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ওজন কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেললে একসঙ্গে পাতে রাখুন কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ। যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলাতে সাহায্য করে। রোজ সকালে খালি পেটে গরম জলে হলুদ, গোলমরিচ এবং আদা খেলে বাড়ে মেটাবলিসম। 


ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়ে হলুদ :

হলুদ ও গোলমরিচ একসঙ্গে ক্যানসারের বিরুদ্ধেও লড়তে পারে। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন ক্যানসারের কোষ নষ্ট করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে হলুদের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।


কাঁচা হলুদের সঙ্গে দুধ :

দুধে এক টুকরো কাঁচা হলুদের ব্যবহার হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে। ভুলে যাওয়ার সমস্যা যাদের আছে কিংবা স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে তবে নিয়মিত কাঁচা হলুদ দিয়ে দৈরি দুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। হলুদ দুধ মস্তিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে । দুধ হলুদ মেটাবলিজমের হার বাড়ায় ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও বয়সের ছাপ, বলিরেখা রুখে দিতেও দারুণ কাজ করে।

 

লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে হলুদ দুধ। এছাড়া শরীরে আলসার বা ঘায়ের প্রবণতা থাকলে তার প্রতিরোধ করে। অ্যাসিডিটির সমস্যাও দূর করে। হলুদ দুধ সর্দি কাশি দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সি সর্দি কাশির মতো সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

 হলুদ দুধে দুটি কাজু বাদাম:

থাইরডের সমস্যা কমাতে হলুদ দুধে দুটি কাজু বাদাম যোগ করতে পারেন। হলুদের কারকিউমিন উপাদান শরীরের ফোলাভাব, ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে কাজ করতে পারে। হাড়ের স্বাস্থ্য মজবুত করে।

 

দুধ হলুদের মধু :

হলুদ দুধে মধু ব্যবহার করলে এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষকে পুনরুদ্ধার ও উজ্জীবিত করে। হলুদ দুধ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত সহায়ক। এটি লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম এবং রক্তনালী পরিষ্কার করে।

 

চার সপ্তাহ টানা খেলে তবেই হাতেনাতে ফল পাবেন। তবে যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।  

কোন মন্তব্য নেই: