দাঁতের ক্যাভিটি

 
দাঁতের ক্যাভিটি

🦷 দাঁতের ক্ষয় (Cavity) কীভাবে গঠিত হয়

দাঁতের ক্ষয় বা ক্যাভিটি হলো দাঁতের এনামেল স্তরে সৃষ্ট একধরনের ক্ষত বা গর্ত, যা ধীরে ধীরে গভীর হয়ে দাঁতের অভ্যন্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। সাধারণত এই সমস্যা শুরু হয় মুখের ভিতরে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া, চিনি ও অ্যাসিডের ক্রিয়ার ফলে

আমাদের মুখে স্বাভাবিকভাবে কিছু উপকারী ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকে। যখন আমরা মিষ্টি, কার্বোহাইড্রেট বা স্টার্চযুক্ত খাবার খাই — যেমন চকোলেট, বিস্কুট, রুটি, কোমল পানীয় ইত্যাদি — তখন এই খাবারের অবশিষ্টাংশ দাঁতের উপর জমে থাকে। মুখের ব্যাকটেরিয়া সেই চিনি ভেঙে অ্যাসিড তৈরি করে, যা দাঁতের উপরের সুরক্ষা স্তর এনামেল-কে ক্ষয় করতে শুরু করে।

হলুদের গুন আরও বাড়বে! সঙ্গে আর কি কি উপাদান যোগ করতে হবে?

প্রথমে দাঁতের উপর প্লাক (Plaque) নামে একটি আঠালো স্তর তৈরি হয়। এই স্তর পরিষ্কার না করলে তা শক্ত হয়ে টারটার (Tartar) এ পরিণত হয়, যা আরও বেশি ব্যাকটেরিয়ার আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁতের ক্ষয় ত্বরান্বিত করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এনামেল ক্ষয় হয়ে নিচের স্তর ডেন্টিন প্রকাশিত হয়, যেখানে স্নায়ু শেষাংশ থাকে। তখন দাঁতে ব্যথা, সংবেদনশীলতা (sensitivity), এবং ঠান্ডা–গরম লাগলে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়।

যদি এই অবস্থায় চিকিৎসা না করা হয়, তবে ক্ষয় আরও গভীর হয়ে দাঁতের পাল্প (pulp) বা মূল অংশে সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যা পরবর্তীতে দাঁতের রক্তনালী ও স্নায়ু নষ্ট করে দেয়। ফলস্বরূপ দাঁত পচে যায়, ফোলা দেখা দেয়, এমনকি দাঁত তুলে ফেলতেও হতে পারে।

দাঁতের ক্ষয় রোধে নিয়মিত ব্রাশ করা (দিনে অন্তত দুইবার), ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার, এবং মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত মিষ্টি বা চটচটে খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। পাশাপাশি বছরে অন্তত একবার ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া দরকার, যাতে প্রাথমিক পর্যায়েই দাঁতের ক্ষয় শনাক্ত ও চিকিৎসা করা যায়।

অর্থাৎ, দাঁতের ক্ষয় হঠাৎ হয় না — এটি দীর্ঘমেয়াদি এক প্রক্রিয়া, যা শুরু হয় ছোট অবহেলা থেকে। সঠিক মুখগহ্বর পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই পারে এই নীরব ক্ষয়কে থামাতে।



দাঁতের ক্যাভিটির সমস্যা হল দাঁতে পোকা ধরার সমস্যা। দাঁতের ক্ষয় হয়ে যাওয়া এবং দাঁতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ার কারণে খাবার খাওয়ার সময় অনেক যন্ত্রণা পোহাতে হয়। এছাড়াও ক্যাভিটি যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে রুট ক্যানেল না করানো ছাড়া উপায় থাকে না। কিন্তু ক্যাভিটির সমস্যা থেকে আমরা চাইলেই মুক্তি পেতে পারি। একটু সতর্কতাই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।


আসুন জেনে নিই দাঁতের ক্যাভিটির সমস্যা প্রতিরোধে জরুরি কিছু করণীয়:


১) নিয়মিত ব্রাশ, ফ্লস এবং অ্যালকোহল মুক্ত মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখুন। দাঁতের পাশাপাশি নজর দিন জিভের দিকেও। নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন জিভ।

২) চিনিযুক্ত ক্যান্ডি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার যতোটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এবং যদি একেবারেই না খেয়ে থাকতে না পারেন তবে এই ধরনের খাবার যা দাঁতে লেগে থাকার সম্ভাবনা বেশি খাওয়ার পরপরই দাঁত ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।

৩) অতিরিক্ত স্টার্চ ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন চিপস, পাউরুটি, পাস্তা এবং অন্যান্য ক্র্যাকার থেকে দূরে থাকুন। এতে ক্যাভিটির সমস্যাও দূরে থাকবে।

৪) যে সকল কার্বোনেটেড সফট ড্রিংকসে অনেক বেশি মাত্রার চিনি, ফসফরাস এবং কার্বনেশন যৌগ রয়েছে তা একেবারেই পান করবেন না। এর পরিবর্তে তাজা ফলের রস পান করুন। এবং অবশ্যই ফলের রস পানের পর মুখ পরিষ্কার রাখুন।

৫) বাচ্চাদের নরম দাঁতে খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হয়। তাই বাচ্চাদের ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন। বাচ্চাদের নরম ব্রিসলের ব্রাশ ব্যবহার করতে দিন এবং টুথপিক ব্যবহার করতে দেবেন না। প্রতি ৩ মাস পরপর বাচ্চাদের ব্রাশ বদলে দিন।

৬) দাঁতের ডাক্তারের কাছে সচরাচর যাওয়া হয়ে ওঠে না। কিন্তু একটু কষ্ট করে হলেও বছরে দুবার ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে চেকআপ করান এবং দাঁতের যে কোনো সমস্যা অবহেলা না করে যতো দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

কোলেস্ট্রেরল নিয়ন্ত্রণে সকালে খালিপেটে ভেজানো বাদাম