কবিতা - সাহিত্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কবিতা - সাহিত্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ব্রত প্রকরণ। শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর প্রতি বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা Sri Sri Laxmi Devi Bratakatha

 ব্রতকথা-

দোল পূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ। 

ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস। 


লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ। 

করিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন। 


সেইকালে বীণা হস্তে নারদ মুনিবর। 

লক্ষ্মী নারায়ণে নমি কহিল বিস্তর। 


বাংলার ভৌতিক চরিত্রঃ

ঋষি বলে মাগো তব কেমন বিচার। 

সর্বদা চঞ্চলা হয়ে ফির দ্বারে দ্বার। 


মর্ত্যবাসী সন তাই ভুগিছে দুর্গতি। 

ক্ষণেকের তরে তব নাহি কোথা স্থিতি। 


প্রতিদিন অন্নভাবে সবে দুঃখ পায়। 

প্রতি গৃহে অনশন জীর্ণ-শীর্ণকায়। 


নারদের বাক্য শুনি লক্ষ্মী ঠাকুরাণী। 

সঘনে নিঃশ্বাস ত্যজি কহে মৃদুবাণী। 


কভুনা কাহার প্রতি আমি কবি রোষ। 

নরনারী দুঃখ পায় নিজ কর্মদোষ। 


যাও তুমি ঋষিবর ত্রিলোক ভ্রমণে। 

ইহার বিধান আমি করিব যতনে। 


অতঃপর চিত্তি লক্ষ্মী নারায়ণে কয়। 

কিরূপে হরিব দুঃখ কহ দয়াময়। 


হরি কহে শুন সতী বচন আমার। 

মর্ত্যবামে লক্ষ্মী রত করহ প্রচার। 


বৃহস্পতিবারে মিলি যত এয়োগণে। 

সন্ধ্যাকালে পুজি কথা শুনি ভক্তিমনে। 


বাড়িবে ঐশ্বর্য্য তাহে তোমার কৃপায়। 

দুঃখ কষ্ট দূরে যাবে তোমার দয়ায়। 


শ্রীহরির বাক্য শুনি আনন্দিত মনে। 

মর্ত্যে চলিলেন লক্ষ্মী ব্রত প্রচারণে। 


অবন্তী নগরে লক্ষ্মী হ'ল উপনীত। 

দেখিয়া শুনিয়া হ'ল বড়ই স্বস্তিত। 


নগরের লক্ষপতি ধনেশ্বর রায়। 

অগাধ ঐশ্বর্য্য তার কুবেরের প্রায়। 


সোনার সংসার তার শূন্য হিংসা দ্বেষ। 

প্রজাগণে পালিত সে পুত্র নির্বিশেষে। 


এক অন্নে সাত পুত্র রাখি ধনেশ্বর। 

যথাকালে সসম্মানে গেল লোকান্তর। 


পিতার মৃত্যুর পর সপ্ত সহোদর। 

হইল পৃথক অন্ন সপ্ত সহোদর। 


ক্রমে ক্রমে লক্ষ্মীদেবী ছাড়িল সবারে। 

সোনার সংসার সব গেল ছারখারে। 


বৃদ্ধা ধনেশ্বর পত্নী না পারি তিষ্ঠিতে। 

গহণ কাননে যায় জীবন ত্যজিতে। 


হেনকালে ছদ্মবেশে দেবী নারায়ণী। 

বন মাঝে উপনীত হলেন আপনি। 


মধুর বচনে দেবী জিজ্ঞাসে বৃদ্ধারে। 

কিজন্য এসেছ তুমি গ্রহণ কাস্তারে। 


কাঁদিতে কাঁদিতে বৃদ্ধা অতি দুঃখভরে। 

তাহার ভাগ্যের কথা বলিল লক্ষ্মীরে। 


সহিতে না পারি আর সংসার যাতনা। 

ত্যজিব জীবন আমি করেছি বাসনা। 


লক্ষ্মীদেবী বলে শুন আমার বচন। 

মহাপাপ আত্মহত্যা নরকে গমন। 


আমি বলি সাধবী তুমি কর লক্ষ্মীব্রত। 

দুঃখ রবি অস্ত যাবে হবে পূর্বমত। 


মনেতে লক্ষ্মীর মূর্তি করিয়া চিন্তন। 

একমনে ব্রতকথা করিবে শ্রবণ। 


যেই গৃহে লক্ষ্মীব্রত গুরুবারে হয়। 

বাঁধা থকে লক্ষ্মী তথা জানিও নিশ্চয়। 


বলিতে বলিতে দেবী নিজ মূর্তি ধরি। 

দরশন দিল তারে লক্ষ্মী কৃপা করি। 


মূর্তি হেরি বৃদ্ধা তাঁরে প্রণাম করিল। 

আনন্দিত হয়ে বৃদ্ধা গৃহেতে ফিরিল। 


গৃহেতে ফিরিয়া বৃদ্ধা করিল বর্ণন। 

যেরূপে ঘাটল তার দেবী দরশন । 


ব্রতের বিধান সব বধূদের বলে। 

শুনি বন্ধুগণ ব্রত করে কৌতূহলে। 


বধূগণ লয়ে বৃদ্ধা করে লক্ষ্মীব্রত। 

হিংসা দ্বেষ-স্বার্থ ভাব হৈল ডিরোহিত। 


মালক্ষ্মী করিল তথা পুনরাগামন। 

অচিরে হইল গৃহ শাস্তি নিকেতন। 


দৈবযোগে একদিন বৃদ্ধার আলয়ে। 

উপনীত এক নারী ব্রতের সময়ে। 


ব্রতকথা শুনি তার ভক্তি উপজিল। 

লক্ষ্মীব্রত করিবারে মানস করিল। 


স্বামী তার চিররুগ্ন অক্ষম অর্জনে। 

ভিক্ষা করি যাহা পায় খায় দুইজনে। 


এই কথা চিন্তি নারী করিছে কামনা। 

নিরোগ স্বামীরে কর চরণে বাসনা। 


ঘরে গিয়ে এয়ো লয়ে কর লক্ষ্মীব্রত। 

ভক্তিসহ সাধবী নারী পূজে বিধিমত।


দেবীর কৃপায় তার দুঃখ হলো দূর। 

পতি হলো সুস্থ দেহ ঐশ্বর্যা প্রচুর। 


কালক্রমে শুভদিনে জন্মিল তনয়। 

সংসার হইল তার সুখের আলয়।


 দয়াময়ী লক্ষ্মীমাতা সদয় হইল। 

রূপবান পুত্র এক তাহার জন্মিল। 


এইরূপে লক্ষ্মীরত করে ঘরে ঘরে। 

প্রচারিত হয় ক্রমে অবস্তী নগরে। 


শুন শুন এয়োগণ এক অপূর্ব ব্যাপার। 

ব্রতের মাহাত্ম হ'ল যে ভাবে প্রচার। 


অবন্তী নগরে এক গৃহস্থ ভবনে। 

এয়োগণ লক্ষ্মীব্রত করে একমনে। 


সহসা সেখানে এলো বণিক তনয়। 

উপনীত হলো তথা ব্রতের সময়। 


ধনরত্ন আদি করি ভাই পঞ্চজন। 

পরস্পর অনুগত রয় সর্বজন। 


ব্রত দেখি হেলা করি সাধুর তনয়। 

বলে একি রত, ইথে কিবা ফলোসায় । 


সদাগর বাক্য শুনি বলে বামাগণ। 

করি লক্ষ্মীব্রত যাতে কামনা পূরণ। 


এই ব্রত যে করিবে ধনে জনে তার।

লক্ষ্মী বরে হবে তার সোনার সংসার। 


শুনি তাহ্য সদাগর বলে অহঙ্কারে। 

যে জন অভাবে থাকে সে পূজে উহারে। 


ধনৈশ্বর্য্য ভোগ আদি যা কিছু সম্ভবে। 

সবই তো আমার আছে আর কিবা হবে। 


ভাগ্যে না থাকিলে লক্ষ্মী কিবা দিবে ধন। 

হেন কথা কভু আমি না শুনি কখন। 


অহঙ্কার বাক্য লক্ষ্মী সহিতে না পারে। 

গর্বের কারণে লক্ষ্মী ছাড়িল তাহারে। 


ধনমদে মত্ত হয়ে লক্ষ্মী করি হেলা। 

নানা রত্ন পূর্ণ তরী বাণিজ্যেতে গেলা। 


দৈবযোগে লক্ষ্মী কোপে সহ ধনজন। 

সপ্ততরী জলমধ্যে হইল নিমগন। 


গৃহমধ্যে ধনৈশ্বর্য যা ছিল তাহার। 

বজ্রাঘাতে দগ্ধ হয়ে হলো ছারখার। 


দূরে গেল ভ্রাতৃভাব হলো ভিন্ন অন্ন। 

সোনার সংসারে তার সকলে বিপন্ন। 


ভিক্ষাজীবী হয়ে সনে ফিরে ঘরে ঘরে। 

পেটের জ্বালায় ঘোরে দেশ দেশান্তরে।


এরূপ হইল কেন বুঝিতে পারিল। 

কেঁদে কেঁদে লক্ষ্মীস্তব করিতে লাগিল। 


সদয়া হইল লক্ষ্মী তাহার উপরে। 

পুনরায় কৃপা দৃষ্টি দেন সদাগরে। 


মনে মনে মা লক্ষ্মীরে করিয়া প্রণাম। 

রতের সঙ্কল্প করি আসে নিজ ধাম। 


লক্ষ্মীব্রত করে সাধ লয়ে বন্ধুগণ। 

সাধুর সংসার হলো পূর্বের মতন। 


এইভাবে লক্ষ্মীব্রত মর্ত্যেতে প্রচার। 

সদা মনে রেখো সবে লক্ষ্মীব্রত সার। 


এই ব্রত যেই নারী করে একমনে। 

লক্ষ্মীর কৃপায় সেই বাড়ে ধনে জনে।। 


করযোড় করি হাত ভক্তি যুক্ত মনে। 

করহ প্রণাম এবে যে থাক যেখানে। 


ব্রতকথা যেবা পড়ে যেবা রাখে ঘরে। 

লক্ষ্মীর কৃপায় তার মনোবাঞ্ছা পুরে। 


লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড় মধুময়। 

প্রণাম করিয়া যাও যে যার আলয়। 


লক্ষ্মী ব্রতকথা হেথা হৈল সমাপন। 

মনের আনন্দে বল লক্ষ্মীনারায়ণ। 


অথ প্রতি বৃহস্পতিবারের লক্ষ্মীদেবীর ব্রতকথা সমাপ্ত-

তিনি জীবিত আছেন আমাদের মাঝে। কোটি কোটি হৃদয়ের মাঝে। জুবিন গর্গ

তিনি জীবিত আছেন আমাদের মাঝে।  কোটি কোটি হৃদয়ের মাঝে।  জুবিন গর্গ এখন শুধুমাত্র একটি নাম নয় , কোটি কোটি মানুষের আনন্দ, বেদনা , যন্ত্রনা।  আগামী ১৮ই নভেম্বর তাঁর জন্মদিন , মহান শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর সমন্ধে কিছু কথা -


জুবিন গার্গ শুধুমাত্র একজন গায়ক বা অভিনেতা নন, তিনি আসামের সমাজ, সংস্কৃতি ও মানবতার এক নিবেদিত কর্মী। সংগীতের পাশাপাশি তিনি নানাভাবে আসামের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।

আরো পড়ুন : এটা ছাড়া শীতের পিকনিকে মজা পাওয়া যায় না।

                         হারহিম শীতে রুম হিটার ব্যবহার করছেন? কিছু সতর্কতা 

তিনি আসামের ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় নিরলস কাজ করে চলেছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে, উৎসবে ও আন্দোলনে তিনি নিজেকে যুক্ত রাখেন। বিশেষ করে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সামাজিক সমস্যার সময় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত “Zubeen Garg Foundation” সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে — যেমন দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শিল্পীদের সহায়তা প্রদান।



জুবিন পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সক্রিয়। কাজিরাঙা অভয়ারণ্য ও রাইনো সংরক্ষণের প্রচারণায় তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর গানের মাধ্যমে তিনি আসামি জনগণকে পরিবেশ সচেতনতা ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা দেন।

এছাড়া, আসামি চলচ্চিত্র শিল্পকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে তিনি নির্মাণ করেছেন Mission ChinaKanchenjungha–র মতো জনপ্রিয় সিনেমা। তাঁর এই সব কর্মকাণ্ড আসামের যুবসমাজকে উৎসাহিত করেছে নিজের সংস্কৃতি ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হতে।

জুবিন গার্গ আজ আসামের এক সাংস্কৃতিক দূত, যার কাজ সংগীতের বাইরে গিয়ে মানুষের হৃদয়ে আলো জ্বালায়।


ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক অনন্য সংগীতপ্রতিভা হলেন জুবিন গার্গ। তিনি শুধু আসামের নয়, সমগ্র ভারতের সংগীতপ্রেমীদের হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান অধিকার করেছেন। গায়ক, সুরকার, অভিনেতা, সংগীত পরিচালক ও কবি—এই বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শিল্পী জুবিন গার্গ আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল প্রতীক।

জুবিন গার্গ জন্মগ্রহণ করেন ১৮ নভেম্বর ১৯৭২ সালে আসামের তিনসুকিয়ার তিরাপ অঞ্চলে। তাঁর পিতা মোহিনী বর্মন গার্গ ছিলেন একজন বিখ্যাত সংগীত শিক্ষক ও অভিনেতা, আর মাতা ইলাবতী গার্গও ছিলেন সংগীতপ্রেমী। ছোটবেলা থেকেই সংগীত তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি প্রথম হারমোনিয়াম বাজানো শুরু করেন এবং খুব অল্প বয়সেই বিভিন্ন আসামি ও বাংলা গান গাইতে শুরু করেন।

জুবিনের সংগীত শিক্ষা শুরু হয় তাঁর পিতার কাছ থেকেই। পরে তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত, ভজন, এবং আধুনিক সংগীতে দক্ষতা অর্জন করেন। কৈশোরে তিনি গঠন করেন একটি ব্যান্ড—“The Electric Piano”, যা আসামের যুবসমাজের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৯২ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম “Anamika” প্রকাশ পায় এবং বিশাল সাফল্য অর্জন করে। এই অ্যালবামই তাঁকে মূলধারার সংগীতজগতে পরিচিতি এনে দেয়।

এরপর থেকে জুবিন গার্গ আসামি, বাংলা, হিন্দি, ও অন্যান্য বহু ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন। বলিউডে তাঁর প্রবেশ ঘটে ১৯৯৫ সালে, যখন তিনি গান গাইলেন ‘Dil Se’ সিনেমার বিখ্যাত গান “Ya Ali” (২০০6, সিনেমা Gangster) এর মাধ্যমে, যা তাঁকে সারাদেশে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। এই গান আজও ভারতের অন্যতম শ্রুতিমধুর ও প্রভাবশালী সঙ্গীত হিসেবে বিবেচিত।

জুবিন শুধু গায়ক নন, তিনি একজন সফল সুরকার ও সংগীত পরিচালকও। বহু আসামি সিনেমায় তিনি সুর দিয়েছেন এবং নিজেও অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে Mission China (২০১৭), Kanchenjungha, Mon Jaai ইত্যাদি। তিনি নিজেই পরিচালনা করেছেন Mission China, যা আসামি চলচ্চিত্র জগতে বাণিজ্যিকভাবে অন্যতম সফল ছবি।

জুবিন গার্গ সমাজসেবামূলক কাজেও অত্যন্ত সক্রিয়। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী রক্ষা, এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য নানা প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। আসামের প্রিয় ‘Rockstar’ হিসেবে তিনি তরুণদের মাঝে দেশপ্রেম ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে—

  • “Ya Ali” (Gangster)

  • “Bismillah”

  • “Yaara”

  • “Pakhi” (Assamese)

  • “Maya”

  • “O Senai”

  • “Tumi Asiba”

  • “Mon” ইত্যাদি।

তাঁর গানে কখনও গভীর ব্যথা, কখনও প্রেমের আবেগ, আবার কখনও সামাজিক বার্তা মিশে থাকে। এজন্যই তাঁর গান শুধুমাত্র বিনোদন নয়, মানুষের অনুভূতির প্রতিফলনও।

ব্যক্তিগত জীবনে জুবিন গার্গের স্ত্রী গারিমা শইকীয়া গার্গ, যিনি নিজেও একজন সংগীতশিল্পী ও সমাজকর্মী। তাঁদের বিবাহিত জীবন শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি এক যৌথ ভালোবাসার মাধ্যমে সমৃদ্ধ।

জুবিনের জীবনের পথ সবসময় সহজ ছিল না। তিনি নানা বিতর্ক, মানসিক চাপ, ও ব্যক্তিগত সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। তবুও তাঁর সংগীত ও অনুপ্রেরণার শক্তি তাঁকে বারবার নতুন করে জাগিয়েছে। তিনি নিজের কথা একবার বলেছিলেন—

“আমি গাই শুধুমাত্র হৃদয়ের জন্য, খ্যাতির জন্য নয়।”

আজ জুবিন গার্গ কেবল একজন গায়ক নন—তিনি আসামের গর্ব, ভারতীয় সংগীতের প্রাণ, এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। তাঁর কণ্ঠে যে মাধুর্য ও আবেগ, তা তাকে সত্যিকার অর্থে “সঙ্গীতের জুবিন” করে তুলেছে।

বিহারের ১০টি প্রধান উৎসব: সময়সীমা এবং উৎসবের বর্ণনা সহ পূর্ণ তালিকা

বিহারের মূল এবং সবচেয়ে পরিচিত উৎসবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল ছট পূজা। এছাড়াও আরও কিছু বিখ্যাত উৎসব ও মেলা প্রতিবছর বিহারে উদযাপিত হয:



বিহারের প্রধান উৎসবছট পূজা: সূর্য দেবতা এবং ছটি মাইয়ার আরাধনায় বিহারের সবচেয়ে পবিত্র ও প্রধান হিন্দু উৎসব। কঠোর উপবাস, নদীর ঘাটে উপাসনা, এবং প্রার্থনা এর বৈশিষ্ট্য।

ভারতের মহিলা ক্রিকেট টীম 

সামা-চাকেভা: প্রধানত মিথিলাঞ্চলে পালিত ভাই-বোনের সম্পর্কের সুন্দর উৎসব 


শ্রাবণী মেলা: দেবঘর, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের ধর্মস্থানে শিবের উপাসনার জন্য প্রসিদ্ধ সোনাপুর


শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর প্রতি বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা - Laxmi Brata

গরুর মেলা: এশিয়ার বিখ্যাত পশু মেলা


মকর সংক্রান্তি: ফসল তোলার উৎসব, মকর সংক্রান্তি মেলা এবং বিহুলা উৎসব


তীজ ও জিতিয়া: বিশেষত নারীদের উপবাস ও পারিবারিক মঙ্গল কামনায় পালন


রাজগীর মহোৎসব: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংস্কৃতির মেলাঅন্যান্য উদযাপিত উৎসব


বুদ্ধ পূর্ণিমা/বুদ্ধ জয়ন্তী: বোধ গয়াতে পালিত ঈদ, হোলি, দীপাবলি: অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব এই উৎসবগুলো বিহারি রা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও পরম্পরাগত ভাবে পালন করে, আর এগুলির সঙ্গে বিহারের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সামাজিক বন্ধন গভীরভাবে জড়িত।


প্রধান উৎসবগুলোর একটি বিশদ তালিকা ও সময় হলো:


ছট পূজা: অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পালিত হয়, যা বিহারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। সূর্য দেব ও ছটি মাইয়ার আরাধনায় এটি অনুষ্ঠিত হয়।


মকর সংক্রান্তি: প্রতি বছরের ১৩-১৪ জানুয়ারি (কখনো কখনো ১৫ জানুয়ারি), সূর্য কুম্ভ রাশিতে প্রবেশ উপলে পালিত


হোলি: মার্চ মাসে, বিভিন্ন তারিখে পালিত যার মধ্যে হোলিকার দহন একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ


দীপাবলি: অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পালিত হয়।


মহাশিবরাত্রি: ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে, বিশেষ করে ভক্তদের মধ্যে প্রচণ্ড জনপ্রিয়


যতিয়া বা যতিয়া ব্রত: সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে পালন করা হয়, এটি মাতৃদেবতার প্রতি উৎসর্গীকৃত


দশেরা বা বিজয়দশমী: অক্টোবর মাসে পালিত।


করমা ও বিশ্বকর্মা পূজা, বর্ষা আর নবরাত্রি-সহ অন্যান্য উৎসবও বিহারে সফলভাবে পালন হয়।


প্রতিটি উৎসবের নির্দিষ্ট তারিখ মাস ও বর্ষ অনুসারে বদলায়, তাই বছরের নির্দিষ্ট তারিখ জানতে স্থানীয় ক্যালেন্ডার বা উৎসব তালিকা দেখতে হয়। এই উৎসবগুলোর সময় এবং ধরন বিহারের খাদ্য, সংস্কৃতি, ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। বিশেষত ছট পূজা বিহারের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক।

শতবর্ষে সুকান্ত ভট্টাচাৰ্য : সংক্ষিপ্ত সাহিত্যিক কর্মজীবন একটি আলোচনা

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৫ আগস্ট ১৯২৬ – ১৩ মে ১৯৪৭) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একটি প্রতিভাধর মার্কসবাদী ও প্রগতিশীল চেতনার কবি। তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন যদিও তার সাহিত্যিক কর্মজীবন খুবই সংক্ষিপ্ত ছিল, মাত্র ৬-৭ বছর। সুকান্ত কিশোর বয়স থেকে লেখা শুরু করেন এবং ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকায় তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ হয়। তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির একনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন এবং তার কবিতা শোষিত জনগণের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার প্রতি নিবেদিত ছিল।



সুকান্তের জন্ম কলকাতার কালীঘাটে, এক নিম্নবিত্ত পরিবারের মধ্যে। তার পিতা নিবারণ ভট্টাচার্য এবং মা সুনীতি দেবী। তিনি বেলেঘাটা দেশবন্ধু স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে। তার কবিতায় যুদ্ধ, শোষণ, দুর্ভিক্ষ ও সাম্প্রদায়িক সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সমাজ পরিবর্তনের আদর্শ প্রতিফলিত হয়। সুকান্ত কর্মজীবনে মানুষদের সহজ ভাষায় প্রকাশ করতে পেরেছিলেন তাদের বেদনা ও আশা। তার জীবনের শেষ দিকে দূর্বল স্বাস্থ্য থাকার পর ১৯৪৭ সালে ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।


সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা ও অন্যান্য সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি 'গণমানুষের কবি' হিসেবে পরিচিত। তিনি কবিতা ছাড়াও গান, নাটক, গল্প ও প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তার সাহিত্যিক প্রভাব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাবিত হলেও তার কবিতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন, কমিউনিস্ট ভাবধারায় রচিত এবং বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ায় তার পৈতৃক বাড়ি অবস্থিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের ক্ষণজন্মা প্রতিভাধর হিসেবে স্মরণীয়।


১. ছাড়পত্র

এই কবিতায় সুকান্ত মানুষ ও সমাজের নিগৃহীতদের মুক্তির প্রতিশ্রুতি বর্ণনা করেছেন। এটি স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি উৎসর্গীকৃত, যেখানে তিনি বলতে চান শোষণ থেকে মুক্তির ছাড়পত্রকে সবাই পাবে।


২. পূর্বাভাস

এই কবিতায় ভবিষ্যতের একটি দৃঢ় ও নতুন পৃথিবীর আভাস দেন সুকান্ত, যেখানে অন্যায় ও অত্যাচার নির্মূল হবে। এটি আশাবাদের কবিতা, যা শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামের শক্তি দেয়।


৩. অভিযান

এই কবিতায় সংগ্রামী মানুষের জীবনের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরা হয়েছে। রাস্তার ধূলিকণার মতো মানুষের কলঙ্ক ও বেদনার অভিব্যক্তি এখানে ফুটে ওঠে। এটি সংগ্রামের সাহসী গীত।


৪. হরতাল

শ্রমজীবীদের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য তাদের সংগ্রামের এক চিত্রণ। এখানে হরতালকে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে যা শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়।


৫. ঘুম নেই

এই কবিতায় কবি দেশের অবস্থা, যন্ত্রণা ও অনিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন। সমাজ পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় ঘুম এসে বন্ধ থাকে, কারণ তিনি জানেন সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি।


৬. মিঠেকড়া

এই কবিতায় অসহায় মানুষের কষ্ট আর বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ‘মিঠেকড়া’ শব্দটিকে তরল ও কোমল মনে হলেও, কবি মানুষের ভেতরের যন্ত্রণা ও আশা মোহনীয়ভাবেই প্রকাশ করেছেন।


৭. ফসলের ডাক

কৃষকের প্রতি একটি আবেদন যেখানে তিনি ফসল ফলানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন, যা দেশের সমৃদ্ধির প্রতীক। এটি কৃষিজীবিদের জীবনের সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।


সুকান্তের কবিতাগুলো সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা এবং সমাজ পরিবর্তনের আশা নিয়ে গড়ে উঠেছে। তার ভাষা সরল ও হৃদয়স্পর্শী, যা পাঠককে ভাবতে ও শক্তি নিতে উদ্বুদ্ধ করে। তার কবিতায় সামাজিক অবিচার, শোষণ, আর শোষিত মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বিদ্যমান থাকে, যা তাকে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দিয়েছে