Winter 2026: হারহিম শীতে রুম হিটার ব্যবহার করছেন? কিছু সতর্কতা


জবর শীত। পারদ দিনকে দিন নামতেই থাকছে। শীতে জবুথবু। হাড়হিম শীতের আরাম যেমন লেপ-কাঁথা, তেমনি রুম হিটার। এখন বাজারে ও অনলাইন এ আকছার পাওয়া যায় রুম হিটার। সুতরাং আপনি কি শীতের শুরু থেকেই রুম হিটার ব্যবহার করতে শুরু করে দিয়েছেন কি ? 


রুম হিটার চটজলদি ঘর গরম করলেও নিয়মিত ব্যবহারে কিন্তু শরীরে বাসা বাঁধতে পারে কঠিন রোগ। তাই ব্যবহার বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। 



প্রথমত, হিটার থেকে গরম বাতাস বেরিয়ে আসে। এর ফলে ঘরের আর্দ্রতা কমে যায় ভীষণভাবে। এমনকী, ঘরের মধ্যের অক্সিজেন এর মাত্ৰা অনেকটাই কমে যায়। তাই, রুম হিটার ব্যবহারে যে নিয়মগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে- 


আর্দ্রতা বজায় রাখতে ঘরে জল রাখুন 

হিটার চালালে ঘরের আর্দ্রতা কমে যায়, যা ত্বক ও শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যা দূর করতে ঘরে একটি জলভর্তি পাত্র রাখতে হবে। আর্দ্রতা বজায় থাকবে। হিটার থেকে যে গরম বাতাস বের হয়, তা ত্বককে অত্যন্ত রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়। 


হিটারের কারণে অনিদ্রা, মাথাব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কনভেনশান হিটার, হ্যালোজেন হিটার অত্যাধিক ব্যবহারে ব্যক্তিকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। 


বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন 

হিটার ব্যবহারের সময় জানালা বা দরজা সামান্য হলেও খোলা রাখুন, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে। অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে হিটার থেকে দূরে থাকুন। 


শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীরাও এই যন্ত্রের কারণে সমস্যায় পড়তে পারেন। হিটারের বাতাস রোগীর ফুসফুসে কফ জমাতে শুরু করে। এই কারণে হাঁচি-কাশি হতে পারে। ফুসফুসে জমে থাকা কফ শুকিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয়। 


আগুন থেকে রুম হিটার দূরে রাখুন 

হিটারটি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে কাপড়, কাগজ বা অন্য দাহ্য বস্তু কাছাকাছি না থাকে। হিটার চালানোর আগে নিশ্চিত করুন যে বৈদ্যুতিক সংযোগটি ঠিক আছে এবং হিটারটি নির্ধারিত তাপমাত্রায় কাজ করছে কিনা।


শিশু ও পোষ্যের থেকে দূরে রাখুন 

রুম হিটার শিশু ও পোষ্য প্রাণীদের নাগালের বাইরে রাখুন, যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। যে বাড়িতে গ্যাস হিটার বা এলপিজি হিটার বেশি ব্যবহার করা হয়, সেসব পরিবারের শিশুদের মধ্যে অ্যাজমার সমস্যা সাধারণত বেশি দেখা যায়। এছাড়া কাশি, হাঁচি, বুকে ঘড়ঘড় শব্দ ও ফুসফুসের ক্ষতির লক্ষণ বেশি দেখা যায় এসব পরিবারেই। কারণ, এই হিটার থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেরোয়। যা ছোট ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ওপর কুপ্রভাব ফেলে।


রুম হিটার দীর্ঘ সময় না চালানো 

রুম হিটার দীর্ঘ সময় চালাবেন না। অতিরিক্ত হিটার চালালে নানা সমস্যা হতে পারে। এছাড়া রুম হিটার নিয়মিত পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করুন, যাতে যান্ত্রিক কোনো গোলোযোগ না হয়। 


প্রতিদিন হিটার ব্যবহারে যা হয় 

কাশি, মাথাব্যথা, বমি বা গা গোলানো, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা বাড়ে, অ্যাজমার রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি হিটার ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে কিছু সাবধানতা মেনে চলা ভালো। এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি শীতে আরামদায়ক এবং নিরাপদ থাকতে পারবেন।

তিনি জীবিত আছেন আমাদের মাঝে। কোটি কোটি হৃদয়ের মাঝে। জুবিন গর্গ

তিনি জীবিত আছেন আমাদের মাঝে।  কোটি কোটি হৃদয়ের মাঝে।  জুবিন গর্গ এখন শুধুমাত্র একটি নাম নয় , কোটি কোটি মানুষের আনন্দ, বেদনা , যন্ত্রনা।  আগামী ১৮ই নভেম্বর তাঁর জন্মদিন , মহান শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর সমন্ধে কিছু কথা -


জুবিন গার্গ শুধুমাত্র একজন গায়ক বা অভিনেতা নন, তিনি আসামের সমাজ, সংস্কৃতি ও মানবতার এক নিবেদিত কর্মী। সংগীতের পাশাপাশি তিনি নানাভাবে আসামের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।

আরো পড়ুন : এটা ছাড়া শীতের পিকনিকে মজা পাওয়া যায় না।

                         হারহিম শীতে রুম হিটার ব্যবহার করছেন? কিছু সতর্কতা 

তিনি আসামের ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় নিরলস কাজ করে চলেছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে, উৎসবে ও আন্দোলনে তিনি নিজেকে যুক্ত রাখেন। বিশেষ করে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সামাজিক সমস্যার সময় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত “Zubeen Garg Foundation” সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে — যেমন দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শিল্পীদের সহায়তা প্রদান।



জুবিন পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সক্রিয়। কাজিরাঙা অভয়ারণ্য ও রাইনো সংরক্ষণের প্রচারণায় তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর গানের মাধ্যমে তিনি আসামি জনগণকে পরিবেশ সচেতনতা ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা দেন।

এছাড়া, আসামি চলচ্চিত্র শিল্পকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে তিনি নির্মাণ করেছেন Mission ChinaKanchenjungha–র মতো জনপ্রিয় সিনেমা। তাঁর এই সব কর্মকাণ্ড আসামের যুবসমাজকে উৎসাহিত করেছে নিজের সংস্কৃতি ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হতে।

জুবিন গার্গ আজ আসামের এক সাংস্কৃতিক দূত, যার কাজ সংগীতের বাইরে গিয়ে মানুষের হৃদয়ে আলো জ্বালায়।


ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক অনন্য সংগীতপ্রতিভা হলেন জুবিন গার্গ। তিনি শুধু আসামের নয়, সমগ্র ভারতের সংগীতপ্রেমীদের হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান অধিকার করেছেন। গায়ক, সুরকার, অভিনেতা, সংগীত পরিচালক ও কবি—এই বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শিল্পী জুবিন গার্গ আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল প্রতীক।

জুবিন গার্গ জন্মগ্রহণ করেন ১৮ নভেম্বর ১৯৭২ সালে আসামের তিনসুকিয়ার তিরাপ অঞ্চলে। তাঁর পিতা মোহিনী বর্মন গার্গ ছিলেন একজন বিখ্যাত সংগীত শিক্ষক ও অভিনেতা, আর মাতা ইলাবতী গার্গও ছিলেন সংগীতপ্রেমী। ছোটবেলা থেকেই সংগীত তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। মাত্র তিন বছর বয়সে তিনি প্রথম হারমোনিয়াম বাজানো শুরু করেন এবং খুব অল্প বয়সেই বিভিন্ন আসামি ও বাংলা গান গাইতে শুরু করেন।

জুবিনের সংগীত শিক্ষা শুরু হয় তাঁর পিতার কাছ থেকেই। পরে তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত, ভজন, এবং আধুনিক সংগীতে দক্ষতা অর্জন করেন। কৈশোরে তিনি গঠন করেন একটি ব্যান্ড—“The Electric Piano”, যা আসামের যুবসমাজের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৯২ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম “Anamika” প্রকাশ পায় এবং বিশাল সাফল্য অর্জন করে। এই অ্যালবামই তাঁকে মূলধারার সংগীতজগতে পরিচিতি এনে দেয়।

এরপর থেকে জুবিন গার্গ আসামি, বাংলা, হিন্দি, ও অন্যান্য বহু ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন। বলিউডে তাঁর প্রবেশ ঘটে ১৯৯৫ সালে, যখন তিনি গান গাইলেন ‘Dil Se’ সিনেমার বিখ্যাত গান “Ya Ali” (২০০6, সিনেমা Gangster) এর মাধ্যমে, যা তাঁকে সারাদেশে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। এই গান আজও ভারতের অন্যতম শ্রুতিমধুর ও প্রভাবশালী সঙ্গীত হিসেবে বিবেচিত।

জুবিন শুধু গায়ক নন, তিনি একজন সফল সুরকার ও সংগীত পরিচালকও। বহু আসামি সিনেমায় তিনি সুর দিয়েছেন এবং নিজেও অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে Mission China (২০১৭), Kanchenjungha, Mon Jaai ইত্যাদি। তিনি নিজেই পরিচালনা করেছেন Mission China, যা আসামি চলচ্চিত্র জগতে বাণিজ্যিকভাবে অন্যতম সফল ছবি।

জুবিন গার্গ সমাজসেবামূলক কাজেও অত্যন্ত সক্রিয়। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী রক্ষা, এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য নানা প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। আসামের প্রিয় ‘Rockstar’ হিসেবে তিনি তরুণদের মাঝে দেশপ্রেম ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে—

  • “Ya Ali” (Gangster)

  • “Bismillah”

  • “Yaara”

  • “Pakhi” (Assamese)

  • “Maya”

  • “O Senai”

  • “Tumi Asiba”

  • “Mon” ইত্যাদি।

তাঁর গানে কখনও গভীর ব্যথা, কখনও প্রেমের আবেগ, আবার কখনও সামাজিক বার্তা মিশে থাকে। এজন্যই তাঁর গান শুধুমাত্র বিনোদন নয়, মানুষের অনুভূতির প্রতিফলনও।

ব্যক্তিগত জীবনে জুবিন গার্গের স্ত্রী গারিমা শইকীয়া গার্গ, যিনি নিজেও একজন সংগীতশিল্পী ও সমাজকর্মী। তাঁদের বিবাহিত জীবন শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি এক যৌথ ভালোবাসার মাধ্যমে সমৃদ্ধ।

জুবিনের জীবনের পথ সবসময় সহজ ছিল না। তিনি নানা বিতর্ক, মানসিক চাপ, ও ব্যক্তিগত সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। তবুও তাঁর সংগীত ও অনুপ্রেরণার শক্তি তাঁকে বারবার নতুন করে জাগিয়েছে। তিনি নিজের কথা একবার বলেছিলেন—

“আমি গাই শুধুমাত্র হৃদয়ের জন্য, খ্যাতির জন্য নয়।”

আজ জুবিন গার্গ কেবল একজন গায়ক নন—তিনি আসামের গর্ব, ভারতীয় সংগীতের প্রাণ, এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। তাঁর কণ্ঠে যে মাধুর্য ও আবেগ, তা তাকে সত্যিকার অর্থে “সঙ্গীতের জুবিন” করে তুলেছে।