শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও লিখেছিলেন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত ‘আপা শ্রীলঙ্কা, নম নম নম নম মাতা, সুন্দর শ্রী বরনী’র মূল রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি ঘটনা।
শ্রীলঙ্কা থেকে আনন্দ সমরকুন ১৯৩০ সালে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে কলা ও সঙ্গীত বিভাগে পড়তে এসেছিলেন। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ছাত্র। ১৯৩৮ সালে তিনি গুরুদেবের কাছে তার দেশের জন্য একটি গান লিখে দেবার জন্য অনুরোধ করেন।
প্রিয় ছাত্রের এই অনুরোধ ফেরাতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ। বাংলায় লিখে দিলেন ‘নম নম শ্রীলঙ্কা মাতা’। সুর করে গানটি তুলেও দিলেন আনন্দকে। ১৯৪০ বিশ্বভারতীর শিক্ষা শেষ করে কবিগুরুর এই গানটি নিয়ে দেশে ফিরে গেলেন আনন্দ সমরকুন। ১৯৪৬ সালে গানটি সিংহলিভাষায় অনুবাদ করে একটি রেকর্ড বের করলেন শ্রীলঙ্কায়। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা পেল ১৯৪৮ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি।
১৯৫০ সালে নতুন দেশের জাতীয় সঙ্গীত ঠিক করার জন্য স্যার এডউইন ওয়াসজারএটনির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়। এ সময় আনন্দ তার অনূদিত ‘নম নম শ্রীলঙ্কা মাতা’ গানটি এ কমিটির কাছে দেন। কমিটি ১৯৫১ সালের ২২ নভেম্বর এই গানটিকেই শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
এভাবেই প্রিয় ছাত্রকে লিখে দেওয়া কবি গুরুর মূল গানটির অনুবাদ হয়ে গেল আরও একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত। শ্রীলঙ্কায় রবীন্দ্রচর্চার পথিকৃৎ ছিলেন আনন্দ। সিংহলি ভাষায় তিনি বহু রবীন্দ্রসঙ্গীত অনুবাদ করেছেন। অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্র সাহিত্য। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনও করতেন। কবিগুরুর এই প্রিয় ছাত্র আনন্দ সমরকুন অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে ১৯৬২ সালের ৫ই এপ্রিল আত্মহত্যা করেন।
সংগৃহীত।
ليست هناك تعليقات:
إرسال تعليق