কেভিন মিটনিক
মাইকেল কেল্স
অ্যালর্বাট গঞ্জালেজ:
অ্যান্ড্রিয়ান লামো:
কেভিন মিটনিক একজন আমেরিকান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসে জন্মগ্রহন করেন। অন্য সব হ্যাকারদের মত তারও একটা ছদ্মনাম রয়েছে। ছদ্মনাম হচ্ছে ”দ্য কনডোর”। উনি একজন সিক্যুরিটি কনসালটেন্ট লেখক। মাত্র
১২ বছর বয়সে হ্যাকিং জগতে প্রবেশ করে মিটনিক। তার হ্যাকিং জীবন শুরু হয়
লস এঞ্জেলসের বাসে পাঞ্চ কার্ড হ্যাকিং এর মাধ্যমে। যাতে ফ্রী যাতায়াত
করাতে পারতেন। ১৯৭৯
সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ইন্টারনেটে আরপানেটে অ্যাকসেস পেয়ে যায় মিটনিক।
আরপানেট ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের একটি নেটওয়ার্ক । এরপর মটোরোলা, নকিয়া মতো বড় প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার হ্যাক করেছিলেন। তার হ্যাকিং বিদ্যার জন্য তিনি গ্লেন কেজ উপাধি পান।
গ্যারি ম্যাককিনন:
গ্যারি
ম্যাককিনন ছিলেন স্কটিশ সিস্টেম ডেভালপার। গ্যারি নিজের কাজের নিয়ে ডুবে
থাকতেন। নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে রাখতেন বাহিরের দুনিয়া থেকে।
ডাক্তারি ভাষায়, তিনি এ্যাসপারজার রোগে ভুগছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
আর্মি, নৌবাহিনী, নাসার মতো বড় বড় সরকারী দফতরে ৯৭ টি কম্পিউটার হ্যাক
করেন। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষতি হয় ৭লক্ষ ডলার। মার্কিন
প্রতিরক্ষা অফিসের কম্পিউটারে একটি মেসেজ দেখায় "“Your security system
is crap,” I am Solo. I will continue to disrupt at the highest levels.”
খোদ প্রতিরক্ষা দফতরে নিরাপত্তার অশনি সংকেত। তাঁর সফটওয়ার সম্বন্ধে গভীরতা ও জ্ঞান দেখে অবাক হয়েছিলেন বড় বড় হ্যাকাররা। তিনি UFO নিয়েও গবেষণা করেছিলেন।
মাইকেল কেল্স
মাইকেল
কেল্স হলেন ইন্টারনেট দুনিয়ার মাফিয়া। তিনি তৈরি করেন denial-of-service
যা বড় বড় কমার্সিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করার ক্ষমতা রাখে। কিউবেকের এই
মাফিয়া ইয়াহু, আমাজন, ডেল, ইবে. সিএনএনের মতো বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির
ঘুম হারাম করে দিয়েছিলেন। তিনি
এক ঘন্টার জন্য সেই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন ইয়াহুকে হ্যাক
করেন। ২০০১ সালে মনট্রিয়েল ইয়থ কোর্ট ৮ মাসের জন্য মাইকেল কেল্স
নজরদারিতে রাখার নির্দেশ দেন ও ইন্টারনেট ব্যবহার না করার নিষেধাজ্ঞা জারি
করে।
অ্যালর্বাট গঞ্জালেজ:
২০০৫
থেকে ২০০৭ অ্যালর্বাট গঞ্জালেজ ও তার গ্রপ মিলে প্রায় ১৭০ মিলিয়ন কার্ড
নম্বর বিক্রি করে খবরের শিরোনামে আসেন। এই প্রথম এটিএম দুর্নীতি নিয়ে
এতবড় হাঙ্গামা ঘটে। যাতে পুলিস প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও কীভাবে এটিএম
নেটওয়ার্ককে বিকল করেছিল তার কিনারা করে উঠতে পারেনি। তিনি একরকম SQL
ইনজেকশন পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন, ইন্টারনেট কর্পোরেট নেটওয়ার্কের সমস্ত
কম্পিউটার ডেটা তাঁর হাতের মুঠোয় ছিল।
পুলিস যখন তাকে গ্রেফতার করে, তাঁর ঘর থেকে পাওয়া ১.৬ মিলিয়ন ডলার নগদ পাওয়া গিয়েছিল। তারমধ্যে একটি ড্রামে ১.১ মিলিয়ন ডলার অর্থ বাড়ির পিছনে মাটিতে পুঁতে রেখে ছিলেন। অ্যালর্বাট গঞ্জালেজ বিশ বছরের কারাদণ্ড শাস্তি ঘোষণা করা হয়।
পুলিস যখন তাকে গ্রেফতার করে, তাঁর ঘর থেকে পাওয়া ১.৬ মিলিয়ন ডলার নগদ পাওয়া গিয়েছিল। তারমধ্যে একটি ড্রামে ১.১ মিলিয়ন ডলার অর্থ বাড়ির পিছনে মাটিতে পুঁতে রেখে ছিলেন। অ্যালর্বাট গঞ্জালেজ বিশ বছরের কারাদণ্ড শাস্তি ঘোষণা করা হয়।
অ্যান্ড্রিয়ান লামো:
গুগোল,
ইয়াহু, মাইক্রোসফট, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো হাইপ্রোফাইল কম্পিউটার
নেটওয়ার্ক ভাঙ্গার কারণে অ্যাড্রিয়ান লামো খবরের শিরোনামে আসেন ২০০৩
সালে। টাইমস অভিযোগ দায়ের করলে অ্যাড্রিয়ান লামোর নামে গ্রেফতারি
পরোয়ানা জারি হয়। ২০০৭,
১২ জুলাই বাগদাদে এয়ারস্ট্রাইকের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পিছনে তিনি ছিলেন এই
খবর মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে প্রকাশ পায়। এই নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায়
আমেরিকা। ২০১০সালে এ নিয়ে অ্যান্ড্রিয়ান লামো খবরের শিরোনামে আসে। তাকে
‘হোমলেস হ্যাকার’ উপাধি দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে তিনি গ্রেফতার হন এবং তাকে
৬৫ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হয়। এখন তিনি একজন থ্রেট অ্যানালাইসিস্ট
হিসাবে কাজ করেন।
অ্যানোনিমাস:
বর্তমান
বিশ্বের সবচেয়ে প্রভারশালী হ্যাকার গ্রপ হচ্ছে অ্যানোনিমাস। তারা অন্যায়
অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে। তারা কোন অন্যায় দেখলে, তারা সাইবার যুদ্ধের
জন্য ডাক দেয়। এরা একটি ছদ্মবেশী হ্যাকার গ্রপ। ভক্তরা এই গ্রপকে ‘ডিজিটাল
রবিনহুড’ নামেও চেনেন। এই গ্রপ তাদের নাম পরিচয় গোপন রেখে হ্যাকিং করে।
এরা সবাই সংঘবদ্ধ ভাবে হ্যাকিং এ অংশ গ্রহন করে এবং তাদের লক্ষ্যকে
তুলোধোনা করে। আবার তারা বিভিন্ন সরকারি, ধর্মীয়, এবং কর্পোরেট
ওয়েবসাইটগুলোতে হানা দেয়। তারা তাদের কার্যক্রম ডিপ ওয়েবে সম্পন্ন করে
থাকে। তাদের
কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, এফবিআই, সিআইএ, পেপাল, মাস্টারকার্ড,
ভিসা ইত্যাদি। এছাড়া তারা বিভিন্ন দেশ যেমন ভ্যাটিকান, চীন, ইসরাইল,
তিউনেশিয়াকে নিজেদের টার্গেট করে।
Source https://www.dailyinqilab.com/article/161487/হ্যাকিং-এক-অজানা-রহস্যময়-জগত